জয়ের জন্য শেষ ওভারে সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। মুস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম দুই বলে চার-ছক্কায় সমীকরণ সহজ করেন সামিউলস্নাহ শিনওয়ারি। তাতে ঢাকা ক্যাপিটালসের সমর্থকদের মনে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভয় ধরাতে পেরেছিলেন এই আফগান ব্যাটসম্যান। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম বলে যথাক্রমে আরিফুল ও শিনওয়ারিকে ফিরিয়ে ৬ রানে ঢাকার জয় নিশ্চিত করেন মুস্তাফিজ।
চট্টগ্রামে সোমবার দিনের প্রথম খেলায় টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রান সংগ্রহ করেছে ঢাকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রান করেছেন লিটন। জবাবে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট। ৬ রানের হারে টেবিলের তলানিতে চলে গেছে সিলেট। অন্যদিকে একধাপ এগিয়ে ছয়ে ওঠে এসেছে ঢাকা।
মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, সাব্বির রহমানদের নিয়ে বড় দলই গড়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। কিন্তু টুর্নামেন্টে টানা ৬ ম্যাচ হেরে পেস্ন-অফ থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে তারা। সপ্তম ম্যাচে এসে হারের বৃত্ত ভাঙলেও অষ্টম ম্যাচে আবারও হেরে যায় লিটন দাসের দল। তবে নবম ম্যাচে এসে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারিয়ে ফের জয়ের দেখা পেয়েছে তারা। যদিও কঠিন চাপে পড়ে যায় শেষ দিকে। সেই চাপ সামলে মুস্তাফিজের শেষ ওভারে এসে জয়ের দেখা পেয়েছে ঢাকা। সিলেটকে হারিয়েছে ৬ রানে। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা দলটি সিলটকে পেছনে ফেলেছে।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে লিটন ও থিসারা পেরেরার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৯৬ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। জবাবে ধীরস্থির ভাবে শুরু করলেও জয়ের পথেই ছিল সিলেট। শেষ দুই ওভারে সিলেটের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। মুকিদুলের ১৯তম ওভারে চার চারে দলের রান বাড়াতে থাকেন জাকের আলী ও আরিফুল হক। তাতে করে শেষ ওভারে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩ রানের। মোস্তাফিজের প্রথম দুই বলে ১১ রান নিয়ে আফগান ক্রিকেটার সামিউলস্নাহ শিনওয়ারি ব্যবধান কমিয়ে আশার সঞ্চার করেন। কিন্তু শেষ চার বলে প্রয়োজনীয় ২২ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি সিলেট। সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছেন রনি তালুকদার। এছাড়া অ্যারন জোন্স ৩২ বলে ৩৬, জাকের আলী ১৩ বলে ২৮ এবং আরিফুলের ১৩ বলে ২৯ দলের স্কোরকে ৭ উইকেটে ১৯০ রানে নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখে।
ঢাকার বোলারদের মধ্যে থিসারা পেরেরা ও মোস্তাফিজ প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন ও মুকিদুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।
শুরুতে টস জিতে ব্যাট করেছে ঢাকা। ঢাকার দুই ওপেনার মিলে শুরুটা ভালোই করেন। তবে ১৬ বলে ২২ রান করে তানজিদ হাসান তামিম বিদায় নিলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় তারা। একপ্রান্তে যদিও ঝড় তুলতে থাকেন লিটন। ৪৮ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৪টি করে ছক্কা ও চার। দুদিন আগে গ্যালারি থেকে 'ভুয়া' 'ভুয়া' স্স্নোগান শোনা গেলেও আজ লিটনের বন্দনায় মেতেছিল সাগরিগা স্টেডিয়াম। এদিন লিটনের এই ইনিংস ছাড়াও সাব্বিরের ২১ বলে ২৪ এবং থিসারার ১৭ বলে ৩৭ রানে ইনিংস ঢাকার স্কোরকে ১৯৭ রানে নিয়ে যেতে ভূমিকা রেখেছে।
সিলেটের বোলারদের মধ্যে সামিউলস্নাহ শিনওয়ারি, টিপু সুলতাম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। রুয়েল মিয়া ও সুমন খান নেন একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৯৬/৬ (তানজিদ ২২, লিটন ৭০, কোটজি ৯, মোসাদ্দেক ৪, সাব্বির ২৪, পেরেরা ৩৭, শাফি ৪*, মুকিদুল ১*; সুমন ১/৪৭, ১/৩২, টিপু ২/২৬, জোন্স ০/১৯, শিনওয়ারি ২/২৭, আরিফুল ০/৩৭)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৮৬/৭ (মানজি ৩, রনি ৬৮, জাকির ৮, জোন্স ৩৬, জাকের ২৮, আরিফুল ২৯, শিনওয়ারি ১২, সুমন ০*, রুয়েল ৪*; আবু জায়েদ ০/২৫, মোসাদ্দেক১/১৬, মুস্তাফিজ ২/৪৬, নাজমুল ০/২৭, মুকিদুল ১/৩১, শাফি ০/১৪, পেরেরা ২/৩১)
ফল: ঢাকা ক্যাপিটালস ৬ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : থিসারা পেরেরা