শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লঞ্চ মালিকদের নজর এখন পর্যটনে

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ২৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
ভাসমান একটি লঞ্চ

ধুঁকতে থাকা ব্যবসাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য লঞ্চ মালিকরা এখন দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চ-ভিত্তিক পর্যটন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন। পুরনো যাত্রী পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত লঞ্চগুলোকে তারা ক্রুজ শিপের মতো ভাসমান বিনোদন যান হিসেবে রূপান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন, যেগুলোতে রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে, থিয়েটার, লাইভ মিউজিক, কিড'স জোনসহ অন্যান্য বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।

লঞ্চ মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, 'এই নতুন পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো- বাংলাদেশের জলপথকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা। বাংলাদেশের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য এই রূপান্তরিত লঞ্চগুলো প্রধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা এর মাধ্যমে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন।' যদি লঞ্চভিত্তিক এই পর্যটন পরিকল্পনা সফল হয়, তবে কেবল লঞ্চ ব্যবসাকেই এটি রক্ষা করবে না। বরং নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে এবং দেশের পর্যটন শিল্পকেও ভালো জায়গায় নিয়ে যাবে।

এদিকে লঞ্চ মালিকরা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সাহায্য চেয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তাদের লঞ্চগুলোকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে এগুলো রূপান্তর করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের হাতে নেই।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহণ সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. বদিউজ্জামান বাদল জানিয়েছেন, 'আমরা নৌ-পরিবহণকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য কাজ করছি। যদিও দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতির শিকার হওয়ায় লঞ্চ মালিকদের কাছে বিনিয়োগ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই।'

তিনি আরও যোগ করে বলেন, 'এখানে মাত্র ২০-৩০টি বড় লঞ্চ আছে, যেগুলোকে ক্রুজ শিপে রূপান্তরিত করা সম্ভব। মালিকরা ইতোমধ্যেই এগুলো বানানোর জন্য ২৫-৩৫ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন। এগুলোকে ক্রুজ শিপে রূপান্তর করতে গেলে আরও ৫-১০ কোটি টাকা প্রয়োজন।'

'ইতোমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ শিল্প হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় ব্যাংকগুলো আমাদের ঋণ দেবে না। তাই, আমরা সরকারের কাছে সাহায্য চাইছি এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য, যেটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের পরিবহণ কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। সস্তা আর নির্ভরযোগ্য পরিবহণ মাধ্যম হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই নৌ-পরিবহণ খাত কাজ করে এসেছে।'

তিনি আরও বলেন, লঞ্চ খাত ভেঙে পড়লে কেবল লঞ্চশিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত থাকা স্থানীয় অধিবাসীরাও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে, যার প্রভাব পড়বে সামগ্রিক অর্থনীতিতে। তিনি জানান, প্রতিদিন ৫০টি বড় ও মাঝারি লঞ্চ ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ছেড়ে যায়, যার প্রতিটিতে ৪০-৬০ জন কর্মচারী কাজ করে।

এদিকে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, এখনো লঞ্চ মালিকরা তাদের উদ্যোগের ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তিনি বলেন, 'সরকার তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আমরা চাই না কোনো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাক।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে