শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে চিনির দাম ভারতের আড়াই গুণ

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
দেশে চিনির দাম ভারতের আড়াই গুণ

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চিনির দামের পার্থক্য দীর্ঘদিনের। ভারতের বাজারে এখন চিনি বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪৩ রুপিতে। বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ে ৫৭ টাকা। সেখানে বাংলাদেশের বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। ভারতের প্রায় আড়াই গুণ দামে চিনি কিনে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা। বাড়তি দামের জন্য সরকারের অতিরিক্ত করকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

পার্শ্ববর্তী দুই দেশের চিনির দামে এত বড় ফারাক নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বড় পার্থক্য বাংলাদেশ আমদানিকারক আর ভারত চিনির রপ্তানিকারক দেশ। তবে মাঝে মধ্যে নিজেদের উৎপাদন কম হলে ভারতও চিনি আমদানি করে। ভারত থেকে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করেও পরিশোধন করছে বাংলাদেশের মিলগুলো। আবার বাংলাদেশের মতো ভারতের ব্যবসায়ীরা শুল্ক-কর পরিশোধ করে বাজারে সেই চিনি তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করছেন ভারতের বাজারে। প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের মধ্যে এ দামের বড় ফারাক আসলে কতটুকু প্রাসঙ্গিক।

দামের এ ফারাকের কারণে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। রামপুরা বাজারে চিনি কিনতে এসে ইয়াসির হোসেন বলেন, 'সব সময় দেখবেন চিনি নিয়ে খামখেয়ালি হয়। সরকার একদম নির্ধারণ করে দেয় কিন্তু বাজারে গেলে সে দামে চিনি পাওয়া যায় না। তারা (কোম্পানিগুলো) কিছু মানতে চায় না'।

তিনি বলেন, 'কোম্পানিগুল আমাদের জিম্মি করে টাকা আদায় করে। সরকারও তাদের কিছুই বলে না। প্রায় ছয় মাস ধরে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় চিনি কিনছি।'

মৌলভীবাজারের পাইকারি চিনি ব্যবসায়ী আবু হোসেনকে বলেন, 'চিনি কোম্পানিগুলো সব সময় তাদের মনমতো চিনির দাম নির্ধারণ করে। বিশ্ববাজারে দাম কমলেও তারা কমাতে চায় না, কিন্তু বেড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়।'

তিনি বলেন, 'কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ানোর আরেক অস্ত্র 'কৃত্রিম চিনির সংকট' তৈরি করা। যখন খুশি মিল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে ব্যবসায়ীদের থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে। দাম বাড়লে কম দামে বিক্রি করা ডিও'র চিনি দিতে চায় না। তখন বাজারে এমনিতেই সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হয়ে চিনির দাম বেড়ে যায়।'

দেশের চিনিকলের মালিকরা বলছেন, অবৈধভাবে চিনি আসার কারণে বৈধপথে আমদানি উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। পাশাপাশি অসম প্রতিযোগিতায় পড়েছে দেশের চিনিকলগুলো। প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বৈধপথে চিনি আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন অনেক আমদানিকারক। চোরাচালান বন্ধে সরকারের কাছে সহযোগিতা চান তারা।

দেশে দেশবন্ধু, আবদুল মোনেম, এস আলম, মেঘনা, সিটি গ্রম্নপের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের প্রধান চিনি সরবরাহকারী। বাংলাদেশের চিনির বাজার এখন মূলত এই পাঁচটি গ্রম্নপের নিয়ন্ত্রণে। কারখানাগুলো হলো- মেঘনা সুগার রিফাইনারি, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রি, এস আলম রিফাইন্ড সুগার রিফাইনারি, আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি ও দেশবন্ধু সুগার রিফাইনারি। এসব কারখানা অপরিশোধিত চিনি এনে পরিশোধনের মাধ্যমে বাজারজাত করে। বেসরকারি এ পাঁচটি চিনিকলের দৈনিক পরিশোধনের সক্ষমতা ১৫ হাজার টনের বেশি। সারাদেশে চিনির দৈনিক চাহিদা সাড়ে ছয় হাজার টন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে