আজকের যায়যায়দিন

দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পুঁজিবাজার নিয়ে কারসাজি করে আসছিল একটি চক্র। তারা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করত। চাহিদামতো টাকা পেলে দুর্বল কোম্পানির নামেও ভালো তথ্য ছড়িয়ে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করা হতো। টাকা না পেলে ভালো কোম্পানির নামে ছড়ানো হতো গুজব।

শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

সম্প্রতি এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে রমনা থানায় প্রতারণামূলক একটি মামলা করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পরে শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. আমির হোসাইন ওরফে নুর নুরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)।

ফের টানা পতনে শেয়ারবাজার

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, 'গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আগে থেকেই সরকারবিরোধী নানা কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন। আমির হোসাইনেরর নামে বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে। চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বিএসইসি কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আসছিলেন। এভাবে তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করতেন। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে আসছিলেন তারা।'

ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান বলেন, 'পুঁজিবাজার স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব বিনিয়োগ করেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে।'

চক্রের অন্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ, টেলিগ্রাম ব্যবহার করতেন। তারা বিভিন্ন গ্রম্নপে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য দিতেন। তারা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কাছে বিভিন্ন ইসু্যতে চাঁদা দাবি করতেন। না দিলে সেসব কোম্পানি সম্পর্কে অপপ্রচার চালাতেন। এমনকি কোম্পানির অফিসেও হামলা করতেন।'

ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, 'নূর নূরানী নামে গ্রম্নপ পরিচালনা করতেন গ্রেপ্তার আমির হোসাইন। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে ৮ থেকে ১০টি গ্রম্নপ চালাতেন তিনি। নুরুল হক হারুন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি পরিচয়ে বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলোর কাছে চাঁদা দাবি করতেন। আব্দুল কাইয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক ব্রোকারেজ হাউজের সঙ্গে যুক্ত। তিনি হোয়াটস্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রম্নপে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য দিতেন।'