বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও চড়া দামে আটকে আছে আলু ও পেঁয়াজ। তবে স্বস্তির খবর, আমনের নতুন চালের সরবরাহ শুরু হওয়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামও কমেছে। অন্যদিকে, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দামে তেমন প্রভাব পড়েনি। মাছের বাজারেও খুব বেশি পরিবর্তন নেই।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে নতুন আমন ধানের চাল আসায় দাম কেজিপ্রতি কমেছে ৩ থেকে ৪ টাকা। প্রতি কেজি মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা ও চায়না ইরি) ৫০ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এ ধরনের চালের কেজি ছিল ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা।
বাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় বিআর-২৮ ও পায়জাম জাতীয় চাল। এ ধরনের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৯ থেকে ৬২ টাকায়। এ মানের চালের দর গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে কমেছে সর্বোচ্চ ৩ টাকা। এছাড়া ৩ টাকার মতো কমে মিনিকেট বা চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন পেঁয়াজ ও আলু বাজারে আসতে শুরু করেছে। আগামীতে সরবরাহ বাড়বে, দামও আরও কমে আসবে। তবে ব্রয়লার, সোনালি কক ও লেয়ার মুরগি আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢঁ্যাড়স ৭০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিটি লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং কাঁচামরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি শিম কেজিতে ৪০ টাকা কমে ৮০ টাকা দরে, ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ছোট সাইজের ৪০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, মুলা কেজিতে ৩০ টাকা কমে ৪০ টাকা এবং জলপাইয়ের কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনেপাতা কেজিতে ৫০ টাকা কমে ১৫০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৫০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে লালশাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, পালংশাক ১৫ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা এবং ডাটাশাক ৩০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। পেঁয়াজ কলির সরবরাহ বাড়ায় বাজারগুলোতে সব ধরনের পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। দেশি পেঁয়াজ ১০ টাকা কমে ১৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৯০ থেকে ১১০ টাকা, কাঁচা আদা ১২০ টাকা এবং পুরান আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, নতুন আলু কেজিতে ৪০ টাকা কমে ১০০ টাকা, বগুড়ার আলু ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পুরান আলু কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন পেঁয়াজ বাজার উঠতে শুরু করায় দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। গত দুই সপ্তাহে পেঁয়াজ কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে। আগামীতে এই দাম আরও কমে আসবে বলে তারা মনে করেন।
এ ব্যাপারে শেওড়াপাড়া বাজারের আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা আ. খালেক বলেন, কালি পেঁয়াজ বাজারে ওঠায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে। আগামী দুই-তিন সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম অনেক কমে আসবে।
এদিকে গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সোনালি কক কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩১০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২৩০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। এসব বাজারে ৫০০ গ্রামের ইলিশের কেজি এক হাজার টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ১৫০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা।