রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

পর্দা নামল জমকালো বীচ উৎসবের

জাবেদ আবেদীন শাহীন, কক্সবাজার
  ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৬

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে লাখো প্রাণের উচ্ছ্বাসে সমাপ্তি হলো সাগরপাড়ে সর্ববৃহৎ উৎসব সাত দিনব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল। জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ দিনে স্থানীয় ও দেশি বিদেশি পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত ছিল মেলাস্থল। উৎসবের শেষ দিন ছিল গ্র্যান্ড সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ জমকালো নানা আয়োজন। এবারের বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে পর্যটকদের জন্য বাড়তি সুযোগ এনে দেওয়ায় টানা ছুটির সুযোগে ৫-৬ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন। মূলত কক্সবাজারকে একটি আন্তর্জাতিকমানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এই উৎসব। যেখানে সমুদ্রের বিশাল নীল জলরাশির আভাস দেখলে মন ছুঁয়ে যায়। এর আগে, বর্ণিল শোভাযাত্রাসহ উৎসবমুখর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই উৎসব শুরু হয়। কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পকে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন সাত দিনের এই উৎসবের আয়োজন করে।

পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, পর্যটন উৎসব দারুণ জমেছে। বেচাবিক্রি ভালো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার নারী-পুরুষ শিশুর উপস্থিতি সৈকতকে মুখরিত করে তুলেছিল। কার্নিভাল উপলক্ষে রঙিন আলোয় আলোকিত করা হয়ে উঠেছিল সৈকত। সাত দিনের এই কার্নিভালে উৎসবমুখর পদচারণা ছিল পর্যটকদের। পুরো শহর পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে। এই কার্নিভাল যাতে প্রতিবছর করা হয়। কারণ, এই কার্নিভালের মাধ্যমে কক্সবাজারের পর্যটন আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। পর্যটকের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্বও বাড়ছে।

মঙ্গলবার রাতে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালের শেষ দিন পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো মোকাম্মেল হোসেন।

এ সময় তিনি বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের সুবিধার্থে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও রেললাইন নির্মিত হয়েছে। এর পাশাপাশি এক্সক্লুসিভ জোন হওয়ায় কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়বে। এ ধরনের আয়োজন কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে ।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবসকে উপলক্ষ করে কক্সবাজারকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে মূলত আমাদের এই আয়োজন। আমরা আশা করছি, সাত দিনের মেলায় বর্ণাঢ্য যে যে আয়োজনগুলো ছিল, সবই পর্যটকসহ সবার প্রাণ ছুঁয়েছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেনÑ বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, টু্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, কক্সবাজার প্রেস ক্লাব সভাপতি আবু তাহের, বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. আবুহেনা প্রমুখ।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, শেষ দিন মঞ্চ মাতিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল চিরকুট ও জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রবি চৌধুরী। এ ছাড়াও ছিল সপ্তাহব্যাপী আয়োজনে সার্কাস প্রদর্শনী, বীচ বাইক র‌্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে শো, আতশবাজি, রোড শো, সেমিনার, ঘুড়ি উৎসব, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, ফানুস উৎসব, সার্ফিং প্রদর্শনী, বিচ ম্যারাথন, বিচ ভলিবল, কনসার্টসহ বিভিন্ন ইভেন্ট উপস্থিত সবার মধ্যে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে