সমাবেশে প্রকাশ্যে নিজ নির্বাচনী এলাকার এক ইউপি চেয়ারম্যানকে গালি দিয়ে হত্যার হুমকিসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপিকে শোকজ করা হয়েছে। রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সদর সিনিয়র সহকারী জজ সেফাতুল্লাহ বৃহস্পতিবার তাকে শোকজের নোটিস পাঠিয়েছেন। শাহরিয়ার আলম এই আসনের টানা তিনবারের এমপি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তিনি।
নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান সেফাতুল্লাহ স্বাক্ষরিত শোকজের ওই নোটিসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে আগামী ১০ ডিসেম্বর রোববার সকাল ১০টার মধ্যে লিখিতভাবে জবার দিতে বলা হয়েছে।
রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগের পরিপেক্ষিতে রাজশাহী-৬ আসনের প্রার্থী শাহরিয়ার আলমকে শোকজ করেছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান। শোকজের জবাব পেলে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে’।
এদিকে, শোকজ নোটিশে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি উল্লেখ করেছেন, গত ২ ডিসেম্বর শাহরিয়ার আলম চারঘাট উপজেলার ফরহাদ আলাউদ্দিন স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় বক্তব্য দেওয়াকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রায়হানুল হকের কর্মী মেরাজুল ইসলাম ওরফে মেরাজ চেয়ারম্যানকে কুলাঙ্গার বলে গালি দিয়েছেন। এছাড়াও আগামি ১৭ ডিসেম্বরের পর তাকে দেখে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।
এছাড়া আগামি ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের আগে কোন প্রকার প্রচার সভা না করার বিধান সত্বেও শাহরিয়ার আলম নির্বাচনী সভা করেছেন। এতে তিনি বিদ্যমান ২০০৮ সালের নির্বাচনী আইনের ৬ (গ) ও বিধি-১১ (ক) এবং ১২ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এসব অভিযোগ নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম হিসেবে চিহিৃত।
গত মঙ্গলবার বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কাছে শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। মেরাজুল রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি রাহেনুল হকের পক্ষে তিনি নির্বাচনে কাজ করছেন।
মেরাজুল ইসলাম রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, গত ২ ডিসেম্বর চারঘাটে আওয়ামী লীগের এক বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহরিয়ার আলম জনসম্মুখে তাকে ‘কুলাঙ্গার’ বলে অপবাদ দেন। পাশাপাশি তিনি ১৭ তারিখের পর তাকে দেখে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। উস্কানিমূলক এই বক্তব্য তিনি প্রচার করেছেন। এতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শাহরিয়ার আলমের এ ধরনের বক্তব্য নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।
চেয়ারম্যান মেরাজ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বক্তব্যের ওই ভিডিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন। এতে প্রতিমন্ত্রীকে বলতে দেখা যাচ্ছে, ‘১৯৯৬ থেকে ২০০১, আমাদের অনেকের চরিত্র হনন করা হয়েছে। নেতারা বিভ্রান্ত করেছেন বলেই কর্মীদের চরিত্র হনন হয়েছে। কারণ, কর্মীরা তো সবকিছু বোঝেন না, জানেন না, জ্ঞান নেই। কর্মীরা ২০২৩ সালে এসেও অনেক কিছু জানেন না বলে ওই মেরাজের মতো একটা কুলাঙ্গার একটা অপব্যাখা দিয়ে সুস্থ শরীরে চলে যেতে পারে। আমি বেশি কথা বলতে চাই না। আমি কী বললাম? ১৭ তারিখ পর্যন্ত কন্ট্রোল। ১৭ তারিখ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ। ১৭ এর পরে যাত্রা হবে নিয়ন্ত্রণহীন।’
যাযাদি/ এস