বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

লক্ষ্মীপুরে ৩১ প্রার্থীর ২৪ জনই জামানত হারাচ্ছেন

সাইফুল স্বপন, লক্ষ্মীপুর
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩১
লক্ষ্মীপুরে ৩১ প্রার্থীর ২৪ জনই জামানত হারাচ্ছেন
লক্ষ্মীপুরে ৩১ প্রার্থীর ২৪ জনই জামানত হারাচ্ছেন

লক্ষ্মীপুরের চারটি সংসদীয় আসনে এবার প্রার্থী হয়েছেন ৩১ জন। এদের মধ্যে ২৪ জন প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। আসন ভিত্তিক মোট প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ বা ৮ ভাগের নীচে ভোট পেয়েছেন তারা।

এদের মধ্যে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এলাকায় অনেকটা অপরিচিত হওয়ায় ভোটার টানতে পারেননি তারা।

জেলা রির্টানিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হয়েছেন ৬ জন। ভোটের ফলাফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের ড. আনোয়ার হোসেন খান পেয়েছেন ৪০০৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগ নেতা ঈগল প্রতীকের হাবিবুর রহমান পবন পেয়েছেন ১৮১৫৬ ভোট। বাকী চার প্রার্থীর কেউই হাজারের কাছাকাছিও ভোট পাননি।

এ আসনে ৮৫টি ভোটকেন্দ্রে ২৬১৭৯৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৬১৯৬২ জন।

প্রায় ২৩.৬৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী জামানত ফেরত পেতে হলে প্রার্থীকে প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ৮ ভাগ ভোট, তথা ৭ হাজার ৭৪৫ ভোট পেতে হবে।

কিন্তু জাতীয় পার্টির মাহামুদুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৭৬৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ গোফরান কেটলি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪০ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নিয়াজ মাখলুম ফারুকী মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৪১০ ভোট ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোশাররফ হোসেন আম প্রতীকে ২৭৬ ভেট পেয়েছেন। ফলে এ চারজন জামানত হারাচ্ছেন।

জেলায় এবার সবচেয়ে বেশি প্রার্থী হয়েছে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি ছাড়াও আরও ৮ টি রাজনৈতিক দল এ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সব মিলিয়ে প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ জনে। যদিও প্রার্থীদের অনেককেই এলাকার লোকজন ছিনতো না। শুধুমাত্র তিনজন প্রার্থীর প্রচার প্রচারণা ছিল। ভোটের ফলাফলে ১২ জন প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন নৌকা প্রতীকে এক লাখ ৩০ হাজার ২১১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। রায়পুর উপজেলা এবং সদরের ৯ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৫১ হাজার ৪২৬ জন। ভোট পড়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ৮৬০ টি। প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ হিসেবে প্রার্থী জামানত পেতে হলে অন্তত ১৮ হাজার ৬০৮ ভোট পেতে হতো। কিন্তু নয়নের প্রতিদ্বন্দ্বি সেলিনা ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ঈগল প্রতীকে ৯ হাজার ২৮ ভোট পেয়েছেন। ফলে সংরক্ষিত নারী এ সংসদ সদস্য জামানত হারাবেন। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকের বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু ২৩৮৬, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের এফএম জসিম উদ্দিন ৯০৩, বিজয়ী নয়নের সহধর্মিণী স্বতন্ত্র প্রার্থী রুবিনা ইয়াছমিন লুবনা তরমুজ প্রতীকে ৩৪৫, জাসদের মো. আমির হোসেন মশাল প্রতীকে ২৩৯, তৃণমূল বিএনপির আব্দুল্লাহ্ আল মাসুদ সোনালী আঁশ প্রতীকে ৩২০, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির জহির হোসেন একতারা প্রতীকে ৩৫২, বাংলাদেশ কংগ্রেস জোটের মো. মনসুর রহমান দাদন গাজী ডাব প্রতীকে ৮৮, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. মোরশেদ আলম চেয়ার প্রতীকে ৫৪৫, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. শরিফুল ইসলাম মোমবাতি প্রতীকে ৬০১, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. ফরহাদ মিয়া হাত ঘড়ি প্রতীকে ৩২৮, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. ইমাম উদ্দিন সুমন ছড়ি প্রতীকে ৭১ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন প্রার্থী জামানত হারাবেন৷ এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৪৩। সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৯১ হাজার ২৩১ টি। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু ভোট পেয়েছেন ৫২ হাজার ২৯৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ নেতা এমএ সাত্তার ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৬২৮ ভোট। কিন্তু বাকী চার প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মোহাম্মদ রাকিব হোসেন ৪৭৩, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মাহাবুবুল করিম টিপু হাতুড়ি প্রতীকে ১১৫, তৃণমূল বিএনপির মো. নাইম হাসান সোনালি আঁশ প্রতীকে ২৮৯, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আবদুর রহিম কাঁঠাল প্রতীকে ৩৮২ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন। জামানত ফেরত পেতে হলে এদেরকে অন্তত ১১ হাজার ৪০৪ ভোট পেতে হতো।

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থী হলেন ৬ জন৷ এদের মধ্যে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৩৭২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাসদের মোশারফ হোসেন নৌকা প্রতীকে ৩৩ হাজার ৮১০ ভোট পান৷ ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইস্কান্দার মির্জা শামীম পেয়েছেন ৭৪৭৪ ভোট, বিজয়ী প্রার্থী আবদুল্লাহর সহধর্মিণী মাহমুদা বেগম তবলা প্রতীকে ৩৫৫, সুপ্রিম পার্টির মো. সোলাইমান একতারা প্রতীকে ৩২০, আবদুস সাত্তার পলোয়ান রকেট প্রতীকে ৬৪৯ ভোট পেয়েছেন। এ চারজন জামানত হারাচ্ছেন৷

এ আসনে রামগতি এবং কমলনগর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৪ ভোট। ভোট পড়েছে ৮৯ হাজার ৭৫৯ ভোট। জামানত ফেরত পেতে প্রার্থীকে ১১ হাজার ২২০ টি ভোট পেতে হতো।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে