শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রোয়াংছড়িতে আবারও নতুন করে আবিস্কার হলো কেএনএফ'র ৭ টি বাঙ্কার!

বান্দরবান প্রতিনিধি
  ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩০
রোয়াংছড়িতে আবারও নতুন করে আবিস্কার হলো কেএনএফ'র ৭ টি বাঙ্কার!

বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে আবারও নতুন করে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ'র ৭ টি বাঙ্কারের খোঁজ পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। গতকাল বুধবার বিকালের দিকে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দুরে বালু পাহাড় নামক স্থানে এ বাঙ্কারের সন্ধান পায় তারা।

জানা যায়, দীর্ঘদিনের সহিংসতার পর গত ৫ নভেম্বর বান্দরবানের রুমায় পাহাড়ে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি বৈঠকের অনুষ্ঠিত হয়। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লাকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে আলোচনা ও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর ওই এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছিলো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আবারো নতুন করে আলোচনায় এসেছে কেএনএফ'র নাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি জেলার রোয়াংছড়ি ঘুরতে আশা দুই জন প্রবাসী পর্যটকের অভিযোগ তাদের কাছ হতে বালু পাহাড় এলাকা হতে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় কেএনএফ সদস্যরা। আটকিয়ে এ বিষয়ে রোয়াংছড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা।

এর আগে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়া ৩ টি জীপ ও ১৫ থেকে ২০ টি মোটরসাইকেল আটকিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠেছিলো এ সংগঠনের বিরুদ্ধে।

রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ পারভেজ আলী বলেন, কে বা কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এরই মধ্যে ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ।

এদিকে শান্তি আলোচনার পরে নতুন করে কেএনএফ'র বাঙ্কার আবিস্কার হওয়ায় এলাকায় টহল জোরদার করেছে সেনাবাহিনী।

বৃহস্পতিবার (১১ই জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোয়াংছড়ি সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দুরুত্বে বালু পাহাড় খ্যাত পাহাড়ের উপরে ৭ টি পরিত্যাক্ত বাঙ্কার। যেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাদের রাত্রি যাপনে ব্যবহৃত কম্বল এবং গুলির কার্তুজ। ধারণা করা হচ্ছে, ওই স্থানটি রোয়াংছড়ি-রুমা আসা যাওয়ার রাস্তা হতে উচু হওয়ার কারনে প্রতিপক্ষের উপর যে কোন ধরনের হামলা চালানোর সুবিধার্থে এই বাঙ্কার তৈরি করেছিলো কেএনএফ।

বাঙ্কার সনাক্তের পর বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গেলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পাহাড়ের ঢালু বেয়ে পালিয়ে যায়। যেখানে গতকাল রাতেও কেএনএফ সদস্যরা সশস্ত্র অবস্থান করছিলো এবং বড় ধরনের নাশকতা করার পরিকল্পনা করছিলো বলে যানা যায়।

এলাকায় নতুন করে কেএনএফ আতঙ্কের বিষয়ে পাইখং পাড়া কারবারি বৈথাং বম বলেন, দীর্ঘ এক বছরের সহিংসতার অবসান হয় শান্তি আলোচনার মাধ্যমে। এর মধ্যে নতুন করে কেএনএফ'র এ ধরনের কর্মকাণ্ড এবং চাঁদাবাজির ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।

বম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি জেমস বম জানান, আমরা পাহাড়ে আর সহিংসতা চাইনা। সহিংসতা পরিহার করে একে অপরের মাঝে বন্ধন রেখে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় শান্তিতে বসবাস করতে চাই।

এ বিষয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির অন্যতম সদস্য রেভা পাকসিস বি.ত্লুং জানান, শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে শান্তি আলোচনা চলাকালীন কেএনএফ'র এমন কার্যক্রম খুবই দু:খজনক। এবিষয়ে কমিটির সাথে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে