শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

আঙুল ছাড়া হাত দিয়েই স্বপ্ন জয়ের চেষ্টা রেজাউল করিমের

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১৭ মার্চ ২০২৪, ২০:৫১
আঙুল ছাড়া হাত দিয়েই স্বপ্ন জয়ের চেষ্টা রেজাউল করিমের

দু'হাতের আঙুল বিহীন হাত দিয়েই চলছে রেজাউল করিম (৮) এর জীবন সংগ্রাম। শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় দমে যায়নি রেজাউল করিম। লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ আর মনের জোর থাকায় অভাবের সংসারে দু'হাতের আঙুল বিহীন ছেলেকে পড়ালেখা করাতে হাল ছাড়েনি আবুলের পরিবার। প্রথম শ্রেণি থেকে আঙুল ছাড়া হাত দিয়ে লিখে শিক্ষা জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

বলছিলাম সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুবিদপুর গ্রামের বসবাসরত দরিদ্র কৃষক আবুল হোসেন এর ছেলে রেজাউল করিমের কথা। রেজাউল করিম সুবিদপুর- ব্রাক্ষমগ্রাও তালীমুল কুরআন নুরানী মাদ্রাসা ২য় শ্রেণী ছাত্র।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রেজাউল করিম ছোট বেলা থেকে হাত ও পা ছিল না। আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠলে তার চেষ্টায় আঙুল ছাড়া হাত ও পা দিয়ে একটু করে দাড়িয়ে সে এখনো কারও সহযোগিতা ছাড়া একা একা চলাচল করতে পারে। লেখা পড়া প্রতি ছিল প্রবল ইচ্ছা ও আগ্রহ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে গেলে তাকে ভর্তি করতে চাননি শিক্ষকগণ।

এমনটাও বলছেন যার হাতের আঙুল নেই সে লিখবে কিভাবে? মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে রেজাউল করিম প্রথম শ্রেণি থেকে হাতের আঙুল ছাড়া লিখে প্রথম শ্রেণির পরীক্ষায় পাস করেছেন। রেজাউল করিম অনেক মেধাবী পাশাপাশি পড়াশোনার প্রতি তার অনেক আগ্রহ রয়েছে।

রেজাউল করিম সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বাবা-মা ও হুজুরদের অনুপ্রেরণায় আমি পড়াশোনা করতে পারছি। হাতের ও পায়ের আঙুল ছাড়া আমার চলাফেরায় অনেক কষ্ট হয়। কৃত্রিম হাতের আঙুল হলে আমি নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ নিজেই করতে পারতাম। আমি বড় হয়ে আলেম হতে চাই।

রেজাউল করিমের বাবা আবুল মিয়া বলেন, আমার এক ছেলে ও দুই মেয়ের সংসার চালাতে কুব কষ্ট করতে হয়। তাদের পড়াশোনা করানোর খরচ জোগাতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। টিভি চ্যানেলে দেখি কত মানুষের আলগা (কৃত্রিম) হাত-পায়ের সাথে আঙুল লাগিয়ে স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করে। আমার ছেলেকে যদি এমন দুটো হাতের আঙুল লাগানো গেলে চলাফেরা ও পড়াশোনা করতে পারতো।

সুবিদপুর- ব্রাক্ষমগ্রাও তালীমুল কুরআন নুরানী মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মাওলানা সাদিকুর রহমান জানান, রেজাউল করিম মেধাবী ও প্রতিভাবান ছাত্র। দুই হাত পায়ের আঙুল না থাকলেও হাতের শক্ত অংশ দিয়ে লিখলেও অনেকের চেয়ে লেখা অনেক সুন্দর। আমাদের মাদ্রাসার সকল শিক্ষকরা হোসেনের প্রতি আন্তরিক। হোসেন পারিবারিক ও মানসিক ভাবে সাহস পেলে ভবিষ্যৎ জীবনে ভালো কিছু করতে পারবে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে