শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফটিকছড়িতে ২৭ ঘন্টায় ৩ শিশুর লাশ উদ্ধার

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
  ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:২১
ছবি-সংগৃহিত

ফটিকছড়িতে ২৭ ঘন্টার ভিতর পুকুরে ডুবে জুনায়েদ (০৬) এবং পল্লব উরাং (০৬) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে টয়লেটের সেফটি ট্যাংকিতে পড়ে মো: রোহান (০৫) নামের আরো এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহত শিশু রোহান ওই এলাকার প্রবাসী মো: শাহজাহানের ১ম সন্তান এবং রোহান স্থানীয় এক মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নিহত রোহানের আপন মামা মো: আব্বাস বলেন- আমার বোনের পাশ্ববর্তী ফুফু শাশুড়ীর ঘরে টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি পরিষ্কার করার জন্য ট্যাংকির ঢাকনি তুলে সেখানে প্লাস্টিক দিয়ে ডেকে রাখে। ভাগনে রোহান বেশিরভাগ সময় ওই ঘরেই থাকে। আজকে দূর্ভাগ্যবশত রোহান ও টাংকিতে পরে যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

অন্যদিকে পুকুরে ডুবে নিহত জুনায়েদ ভূজপুর ইউপির আমতলী শামসুদ্দিন চেয়াম্যান বাড়ি দুবাই প্রবাসী মো: রুবেল এর ২য় পুত্র। বুধবার (২৭শে মার্চ) দুপুর ১টার দিকে পূর্ব ভূজপুরের ৮নং ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইব্রাহিম। তিনি বলেন-এ ধরনের মৃত্যু সত্যিই বেদনাদায়ক। অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরী।

এছাড়াও, গত ২৬শে মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুরে হারুয়ালছড়ি রাঙ্গাপানি চা বাগানের উরাং পাড়ায় পল্লব উরাং (০৬) নামে আরো এক শিশু পুকুরে ডুবে মারা যায়। নিহত শিশুটি ওই এলাকার রুবেল উরাং এর ছেলে এবং রাঙ্গাপানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রথম শ্রেণীর ছাত্র।

নিহত জুনায়েদের ব্যাপারে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুনায়েদ দুপুরে বাড়ির পুকুরে গোসল করতে যায়। অনেকক্ষণ তাকে খুঁজে না পাওয়ায় পরে পুকুরে খোঁজার সময় এক পর্যায়ে পুকুরের পানিতে ডুবে মাথা ভেসে উঠে, এমন অবস্থায় প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে উদ্ধার করে ভুজপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

পল্লব উরাং এর মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তার পিতা রুবেল উরাং বলেন- আমার ছেলে দুপুর গোসল করার জন্য পুকুরের গিয়েছিল। পরে গোসল করে আসতে দেরি হওয়াতে আমরা ভাবছি হয়তো অন্য ছেলেদের সাথে খেলাধুলা করছে। ভাবতেই পারিনি আমার ছেলে এভাবে পুকুরে ডুবে মারা যাবে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান , তারা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটির লাশ পুকুরে ভাসতে দেখতে পায়। সেখান থেকে তুলে, তার পরিবারকে সাথে নিয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাঙ্গাপানি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল উরাং বলেন, এ ঘটনা আসলে মানতে কষ্ট হচ্ছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতো না।

এদিকে, ২৭ ঘন্টার ব্যবধানে ফটিকছড়িতে পুকুরে ডুবে ২শিশুর মৃত্যু এবং সেফটি ট্যাংকিতে পড়ে আরো এক শিশুর মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সচেতন মহল বলছে- যত্রতত্র পুকুর এবং অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে ফটিকছড়িতে বারবার পুকুরে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। পর্যালোচনা করে দেখা যায় ফটিকছড়িতে প্রতিবছর ২০-৩০টি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে শুধুমাত্র পুকুরে ডুবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে