সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সারিয়াকান্দির পর্যটন কেন্দ্রগুলো নতুন সাজে সেজেছে

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৪৩
সারিয়াকান্দির পর্যটন কেন্দ্রগুলো নতুন সাজে সেজেছে

আসছে পবিএ ঈদুল ফিতরকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত সারিয়াকান্দির পর্যটন কেন্দ্রগুলো। কালিতলা প্রেম যমুনার ঘাট ও ফিস পাসকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। প্রেম যমুনার ঘাট ও ফিস পাস এ দৃষ্টি নন্দন ছাতা বসানো হয়েছে। যারা বেড়াতে আসবে তারা কিছু সময়ের জন্য বসে থেকে প্রকৃতি উপভোগ করতে পারে।

যারা নদীপ্রেমী মানুষ কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তারা নির্দ্বিধায়, সারিয়াকান্দির বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে আসতে পারেন। সারিয়াকান্দিতে উল্লেখযোগ্য যেসব দর্শনীয় স্হান আছে সেগুলো হলো কালিতলা ঘাট,প্রেম যমুনার ঘাট,দেবডাঙ্গা ফিস পাস,দেবডাঙ্গা বাঁধ, দীঘলকান্দী মিউজিয়াম পার্ক,হাসনা পাড়া স্পার।

কালিতলা ঘাট অন্যান্য ঘাটের তুলনায় এ ঘাটেই পর্যটকদের ভীড় বেশি লক্ষ্য করা যায়।নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে এটি একটি অনন্য স্হান ।চরে গিয়ে ঘুরে আসতে চাইলে নৌকায় চড়তে পারেন।এখানে নৌকা রির্জাভ নিয়েও ঘুরতে পারেন অথবা একজন একজন করেও যাওয়া যায়। দৃষ্টিনন্দন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ ঘাট। এছাড়া সারাদিন ঘুরে ক্ষুধা লাগলে, খাবারের জন্য এ ঘাটের একটি সুনাম রয়েছে। এখানে আছে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান ও হোটেল।হোটেল গুলোর বিশেষত্ব হলো যমুনা নদীর টাটকা রান্না মাছ। নদীর মাছের স্বাদ নিতে গেলে কালিতলা ঘাটের কোন বিকল্প নেই।এ স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন খুব অল্প খরচে। এখান কার সব থেকে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায় মতির হোটেলে।

এখানে আরেকটি বিখ্যাত ঘাট হলো প্রেম যমুনার ঘাট।কে কখন কিভাবে এ নাম রেখেছে তা না জানা গেলেও।সবাই যে এসে এখানে প্রেম করে বলে নাম প্রেম যমুনার ঘাট তা কারও জানা না থাকলেও, প্রেম যমুনার ঘাট নামটি শুনলে যে কেউ বেশ মজা পান।এই ঘাটের খোলামেলা পরিবেশ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এরকম পরিবেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে আপনিও এখানে আসতে পারেন।

সারিয়াকান্দির দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যেও একটি উল্লেখযোগ্য স্হান হলো দেবডাঙ্গা ফিস পাস, এটি কুতুবপুর ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত একটি স্থান। স্থানীয়দের কাছে এটি সুইচ গেট হিসেবেও বেশ পরিচিত।বর্ষা মৌসুমে এর সৌন্দর্য থাকে অন্যরকম। এই সুইচ গেটের বৈশিষ্ট্য হলো যখন যমুনা নদীর পানি বেড়ে যায় তখন এটি খুলে দেওয়া হয়। এতে যমুনা নদীর পানি বাঙালি নদীতে প্রবাহিত হয়।

এছাড়াও রয়েছে নয়নভিরাম দেবডাঙ্গা গ্রোয়েন বাঁধ কালিতলা ঘাট কিংবা প্রেম যমুনার ঘাটে দর্শনার্থীরা গেলেও এটি সারিয়াকান্দি উপজেলা থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় এই স্থান অতোটাও পরিচিত হয়নি। তবে এর মনোরম পরিবেশ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।

এসব ঘাটে আছে ইঞ্জিনচালিত ও ইঞ্জিন ছাড়া নৌকা ও স্পিড বোট পাবেন। আপনি চাইলে সেসবে চড়ে মাত্র ৩০-২০০ টাকা খরচ করে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।

আরেকটি বিনোদনের জায়গা গড়ে উঠেছে দীঘলকান্দী বাঁধের পাশে।এটি একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক এর নামকরনও করা হয়েছে এলাকার নামেই পার্কটির নাম হল দীঘলকান্দি পার্ক।এটি একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন পার্ক। এ পার্কে দুর্লভ কিছু ফুল ফলের গাছ আছে।

এছাড়া শিশু কিশোরদের জন্য রাইডার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য টয় ট্রেন, নাগর দোলা।এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির রঙ্গিন মাছ,পাখি, খরগোশ, কবুতর আর বলা যায় একটি মিনি চিড়ািয়াখানা।পার্কের প্রবেশ মুল্য ৫০ টাকা। পার্কটির স্বত্বাধিকারী এ্যাড.জাকিউল আলম সোহেল বলেন,পার্কটিতে নতুন কিছু জায়গা ও রাইড সংযোশন করা হয়েছে৷ আমরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের জন্য একদম প্রস্তুত।এবার ঈদে যারা পার্কে প্রবেশ করবে তাদের টিকেটের উপর রেফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। রেফেল ড্র তে একটি এন্ড্রয়েড ফোন সহ ২৫ পুরস্কার থাকবে।

এছাড়া যেতে পারেন সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া মসজিদে। মসজিদটি যমুনা নদীর পাড় ঘেঁষে হওয়ায় দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এজন্য অনেকেই মসজিদটি দেখতে ভীড় করে। নদীতে যখন টইটম্বুর পানি থাকে তখন গোধূলি বেলায় মসজিদ ও তার আশে পাশে জায়গা গুলো খুবি সুন্দর দেখার মতো হয়।

সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন,এখানে বেড়াতে এসে জেনও কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনার সম্মুখীন না হন। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি, দর্শনার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। যে কোনও সমস্যায় থানা পুলিশকে জানালে তখনই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুর রহমান বলেন,সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন সর্বদাই সচেষ্ট পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে।উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদের সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে