সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে গ্যাস বিস্ফোরণ: বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ দগ্ধ ২ 

গাজীপুর প্রতিনিধি
  ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৫৯
ছবি : যায়যায়দিন

গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে কক্ষে জমে থাকা গ্যাসের বিষ্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ দুইজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। রোববার দুপুরে গাজীপুর সদর থানার শিমুলতলী সালনা রোড এলাকায় বিসমিল্লাহ টাওয়ার নামক ৮তলা ভবনের নীচতলায় ওই দূর্ঘটনা ঘটেছে।

আহতরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ভেটেরিনারী বিভাগের মাস্টার্স শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. ফারহান হাসান (২৬) এবং ওই ভবনের কেয়ার টেকার খাইরুল ইসলাম (৩৬)। ফারহানের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও এবং পিতার নাম মো. আফসার আলী।

জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুস সামাদ এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানান, ৮তলা ভবনের নীচ তলায় রোববার দুপুর ১ টার ৩০ মিনিটে ওই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বাড়ির লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। আগুনে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তাদের মধ্যে ফারহানের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। কেয়ার টেকার খাইরুল ইসলাম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাসায় ফিরে গেছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত।

আহত ফারহানের সুমন্দি এসএম ফরহাদুল আবেদীন জানান, ফারহান ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল। গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে ফারহান শনিবার প্রথমে ভুরুলিয়া এলাকায় আমার বাড়ি উঠেছিল। সেখান থেকে রোববার দুপুরে ৮তলা ভবনের নীচতলায় তার কক্ষে ব্যাগ-মালামাল রাখতে গিয়ে বৈদ্যুতিক বাতি জ¦ালাতে সুইচ চাপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ শব্দে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পাশে থেকে কেয়ার টেকার ফারহানকে উদ্ধার করতে গিয়ে তিনিও আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ওই কক্ষে গ্যাস লাইন বা চুলা থেকে গ্যাস লিকেজ হওয়ার পর জমা হয়েছিল। বাতি জ¦ালাতে গিয়ে সুইচের স্পার্কিং থেকেই ওই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে তার ধারণা। ফারহান শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীণ রয়েছে।

শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটো আবাসিক সার্জন মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ফারহান ৩০শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন, তার শ^াসনালীতেও পোড়া রয়েছে। তিনি বর্তমানে এ হাসপাতালের এইচ ডি ইউ-তে ভর্তি রয়েছেন।

স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ অগ্নিকান্ডের কারণ হিসেবে বলেন অন্যকথা। তিনি বলেন, নীচতলার ওই কক্ষে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। ঈদের ছুটিতে কক্ষের দরজা-জানালা ও তালা আটকিয়ে ফারহান হাসান যায়। ধারণা করা হচ্ছে বন্ধ থাকাবস্থায় ঘওে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের কোন লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে ওই রান্না ঘরে জমেছিল। রোববার দুপুরে ওই কক্ষের অদূরেই কেয়ার টেকার রান্না করছিলেন। ওই চুলা থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ কিংবা ভবনের লিফট থেকে কোনভাবে স্পার্কিয়ের ফলে রান্নার কক্ষে জমে থাকা গ্যাসে উচ্চ শব্দে বিষ্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হয়েছে। আগুনে কেয়ার টেকারের রান্নার হাড়ি-পাতিলাসহ চুলা এবং লিফটের নীচতলা, ৫ম তলা, ৬ষ্ঠ তলা ও ৭তম তলার লিফটের দরজাও ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া রান্না ঘরের দরজা-জানালা ভেঙ্গে গেছে এবং সেখানে থাকা খাটসহ-বিছানা ও তৈজষপত্র পুড়ে গেছে।

সদর থানার ওসি মো. রাফিউল করীম রাফি জানান, ওই কক্ষে গ্যাস সিলিন্ডার ছাড়াও তিতাস গ্যাসের লাইন রয়েছে। এখন কক্ষে জমে থাকা গ্যাস কি তিতাস গ্যাসের চুলা থেকে না-কি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে বের হয়েছিল তা তদন্তের পর জানা যাবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে