শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

দামুড়হুদা উপজেলায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
  ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২০:১৮
দামুড়হুদা উপজেলায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট

দামুড়হুদা উপজেলায দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। বেশির ভাগ টিউবওয়েলে উঠছে না পানি।দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি এবং প্রচন্ড তাপদাহ। মনে হচ্ছে গ্রামের টিউবওয়েল গুলোতে পানি শেষ হয়ে গিয়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দেওয়ায় একদিকে যেমন খাবার দিকে যেমন খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে, তেমনিভাবে গোসল, রান্নাবান্না ও গবাদি পশুর খাবার ও গা ধোওয়া খবই কষ্ট করতে হচ্ছে।

উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা উপজেলার প্রতিটি গ্রামের কমবেশি নলকুপে মিলছে না পানি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে উপজেলার গ্রামগুলোতে কয়েক হাজার পরিবার।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ধান্যঘরা, বুইচিতলা, মদনা, বড়বলদিয়া, জগন্নাথপুর, কার্পাসডাঙ্গা, শিবনগরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামে গিয়ে পানি সংকটের বিষয়টি নজরে পড়ে। এসব ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামে এ সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। শত শত টিউবওয়েল মাস খানেক ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

দামুড়হুদা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানিয়েছে, এসব এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। বেশ কয়েক বছর আগেও ৬০ বা ৯০ ফুট গভীরে পানির স্তর মিললেও এখন ১৫০ ফুট গভীরেও মিলছে না। এতে করে অচল হয়ে পড়েছে নলকূপগুলো। কিছু নলকূপে পানি মিললেও তা পর্যাপ্ত নয়। কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামের ৬০ বছর বয়সী জামাত আলী বলেন, “পানির অপর নাম জীবন, কিন্তু এই পানিই এখন আমাদের কাছে সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।এক জগ পানির জন্য এর বাড়ি, ওর বাড়ি ছুটতে হচ্ছে; তারপরও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ ভোগান্তির কথা বলে বুঝানোর মতো না। খুব কষ্ট করে আমাদের দিন যাচ্ছে। একই গ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী জাহানারা বলেন, “হঠাৎ করেই গ্রামের টিউবওয়েলগুলোতে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলে এক ঘণ্টা চাপলেও পরিবারের জন্য একবেলার জন্য জল নিতে পারি না। এ সঙ্কটের কারণে নিত্যদিনের কাজগুলোও করতে পারছি না।”পানি সংকট নিরসনের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারকে জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসী।

টিউবওয়েল মিস্ত্রি বিল্লাল ও নুর ইসলাম বলেন, বেশ কয়েক বছর আগেও ৬০ বা ৯০ ফুট গভীরেই পানির স্তর পাওয়া যেত। কিন্তু এখন ১৫০ ফিট গভীরে পাইপ স্থাপন করলেও পানির দেখা মিলছে না।এর কারণ হিসেবে তিনি অনাবৃষ্টি ও খাল-বিলগুলো ভরাট করাকে দায়ী করেছেন।

কার্পাসডাঙ্গা চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে পানির সংকটদেখা দিয়েছে। পরিষদের পক্ষ থেকে আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করে দেওয়া হচ্ছে। সেগুলোতেও পানির সংকট দেখা দিয়েছে।পানির এই সংকট দূর করতে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

দামুড়হুদা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে পুকুর-ঘাট, খাল-বিল ও নদ-নদী শুকিয়ে গেছে। এছাড়া পুকুর ভরাট ও নদী ছোট হয়ে আসায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে চলে যাওয়ায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।বিশেষ করে ওইসব এলাকায় শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উত্তোলন করায় এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি ।পানির স্তরসহ সব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা জানান।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে