সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১

 কুলাউড়ায় চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের তিন শীর্ষনেতা!

কুলাউড়া (মৌলভীবাজা) প্রতিনিধি
  ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ২০:১৮
 কুলাউড়ায় চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের তিন শীর্ষনেতা!

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রথমধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন শীর্ষ নেতা। প্রতীক বরাদ্ধের পর তিন’জনই সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। দলের অন্যান্য দায়িত্বশীলদের নিজের বলয়ে নিতে, তিন নেতাই চালাচ্ছেন প্রাণপণ চেষ্টা। এদিকে শীর্ষ ৩ নেতা প্রার্থী হিসেবে অনড় থাকায় মধুর সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ কর্মীরা।

অপরদিকে এনিয়ে সাধারণ জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তবে, কর্মীদের মতামত ভিন্ন। তাদের মতে, এবার সাধারণ কর্মীদের মূল্যায়ন হবে এবং নেতাদেরও জনপ্রিয়তা যাচাই হবে। প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম এবং সহ- সভাপতি কামাল হাসান।

রফিকুল ইসলাম রেনু: কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্ষিয়ান নেতা রফিকুল ইসলাম রেনু। উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের ৩ বারের সাবেক চেয়ারম্যান। দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন ২ যুগেরও বেশি সময়।

এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন অনেকটা ঢাকঢোল পিঠিয়ে। গত দু’মাস থেকে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা করে সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। দলের নেতাকর্মীরা যদি তাঁর সাথে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ না করেন, তাহলে তিনিই হবেন শক্ত প্রতিপক্ষ।

রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, তিনি দলের সকল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েই প্রার্থী হয়েছেন। এটাই তাঁর জীবনের শেষ নির্বাচন। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছরের রাজনীতিতে কখনও কোন জাতীয় কিংবা উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।

দীর্ঘদিন রাজনীতির মাধ্যমে সবাইকে নির্বাচনে সাহায্য করেছেন। এবার নিজের ভাগ্যকে পরীক্ষা করতে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর অকুণ্ঠ সমর্থণ পাচ্ছেন তিনি।

কামরুল ইসলাম: কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম। রাজনীতিক পরিবারের মানুষ বলেই সর্বস্থরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় তিনি।

তাঁর বাবা মরহুম আব্দুল জব্বার ছিলেন সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান। জীবদ্দশায় উপজেলার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা কামরুলের রয়েছে সর্বদলীয় গ্রহণ যোগ্যতা।

নির্বাচন প্রসঙ্গে কামরুল বলেন, এটা দলীয় নির্বাচন নয়, দলীয় প্রতিকও নেই। প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রেও দলের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এবারের উপজেলা নির্বাচনটি নেত্রী সবার জন্য ওপেন করে দিয়েছেন। সকলের অংশগ্রহনে প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচন ও জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে। জনগণ যাকে খুশি নির্বাচিত করবে।

দলের অনেক নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে রয়েছেন। নেতাকর্মীদেরও কোনরূপ চাপ সৃষ্টির সুযোগ নেই।

কামাল হাসান: কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল হাসান। প্রবীণ সাংবাদিক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। একসময়ে বাংলাবাজার পত্রিকার কুটনীতিক রিপোর্টার ছিলেন।

এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহায়তাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মাকান্ড পরিচালনা করে মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে একাধিকবার দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেননি। কামাল হাসান বলেন, এটা কোন দলীয় নির্বাচন নয়।

এই নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। মানুষ যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকেই নির্বাচিত করবে। দলীয় প্রতিক ছাড়া নির্বাচন দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। উল্লেখ্য, ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে ২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪৮ ভোটার অধ্যুষিত কুলাউড়া উপজেলায় মোট ১০৩ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। আসন্ন নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মইনুল ইসলাম সবুজ, চা-শ্রমিক নেতা রাজ কুমার কালোয়ার রাজু ও পুরান উরাং, মো. সাইফুল ইসলাম কুতুব এবং মো: আফজাল হোসেন সাজু প্রতিদন্ধিতা করছেন। সংরক্ষিত নারী আসনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস পপি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নারী নেত্রী নেহার বেগম প্রতিদন্ধিতা করছেন।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে