শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বেলকুচিতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে হামলা, গ্রেপ্তার ১০

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০২ মে ২০২৪, ১৯:০১
ছবি-যায়যায়দিন

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। এঘটনায় নির্বাচনী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। সরকারী কাজে বাঁধাদান ও থানায় ভিতরে হট্রগোলের অভিযোগ দায়ের করা মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

হামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকিরের কর্মী সমর্থক রেজাউল করীম, মোশারফ হোসেন, কামাল পারভেজ ও আব্দুল কাদের আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রেজাউল করীম ও মোশারফ হোসেনকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকির।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে বেলকুচি প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে বেলকুচি উপজেলার শাহপুর ডিএসএস স্কুল এলাকায় পথসভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেলকুচি উপজেলার চালা সাত রাস্তার মোড় এলাকায় পৌছলে আমার গাড়ি বহড়ে হামলা চালানো হয়। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আমিনুল ইাসলামের উপস্থিতিতে এবং তার নির্দেশে হামলা চালানো হয়। এতে আমার চার কর্মী সমর্থক আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি ও আমার কর্মী সমর্থকরা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর আতœরক্ষায় বেলকুচি থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। বেলকুচি থানার সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে। এছাড়া জামতৈল বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আমিনুল ইসলামের মদদে এই ঘটনা ঘটছে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল তার কোম্পানীর বেতন ভুক্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সরকারকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে চান। এমপি মমিন মন্ডলের ভাই আব্দুল আলিম মন্ডল ও জুবায়ের মন্ডল আমিনুলের পক্ষে সভা-সমাবেশ ও ভোট প্রার্থনা করছেন। হামলার ঘটনার পর থেকে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

তবে বদিউজ্জামান ফকিরের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদিউজ্জামন ফকিকের কর্মী সমর্থকরা পরিকল্পিত ভাবে রাতে আমার উপর হামলা করেছে। হামলায় আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে। নিজেরা হামলা করে এখন আমার উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। আমার উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তারা মিথ্যা অভিযোগ করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।

আগামী ৮ মে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন, আমিনুল ইসলাম সরকার, বদিউজ্জামান ফকির ও মীর সেরাজুল ইসলাম।

প্রার্থীদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম সরকার বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের মালিকাধীন শিল্প গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কটন ক্লাব (বিডি) এর জিএম প্রশাসন, বদিউজ্জামান ফকির এনায়েতপুর থানা আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদক, মীর সেরাজুল ইসলাম সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পিএস ও ঢাকার বনানী থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই। বদিউজ্জামান ফকিরকে সমর্থন দিচ্ছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।

এবিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুলের কর্মী সমর্থকরা থানায় এসে হট্রগোল ও সরকারী কাজে বাঁধা দেয়। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ট ও সুন্দর করতে কাজ করছে পুলিশ।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে