শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ডিবি পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি

রাজশাহী অফিস
  ০৫ মে ২০২৪, ১৫:২৩
ছবি: যায়যায়দিন

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবির অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার পর স্থানীয়রা গোদাগাড়ীর প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আনোয়ারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। খবর পেয়ে কর্মকর্তারা অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে গিয়ে পরিস্তিতি শান্ত করে অবরুদ্ধ এএসআইকে উদ্ধার করে।

শনিবার (৪ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার গোগ্রাম বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

অপহরনের শিকার যুবকের নাম সোহান আলী (১৮)। তিনি গোগ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী মুর্ত্তজা আলীর ছেলে।

সোহান আলী জানান, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে দোকান বন্ধ করে সামনের মোড়ে বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছিল। এই সময় দুটি মোটরসাইকেলে চারজন এসে নিজের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এর পর নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম ঠিকানা বলার পর সোহানকে জোর করে মোটরসাইকেল তুলে নেয়। কিছু দুর যাওয়ার পর সোহানের হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরানো হয়।

এর পর তাকে প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় তারা বলে তোর বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল নইলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দিবো। এই সময় আমার ফোনে বারবার ফোন আসছিল। কিন্তু তারা ফোনে কথা বলতে দেয়নি। এর পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বসন্তপুর- খেতুরধামের রাস্তায় ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে যায়। সেখান থেকে তিনি একা গোগ্রাম বাজারে চলে যায়।

গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সোহানকে অপহরণের পর এএসআই আনোয়ার সাদা পোষাকে গোগ্রাম বাজারে যান। সেখানে স্থানীয় লোকজন তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তাদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিলে উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে সেখানে যান গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সোহেল রানা এবং গোদাগাড়ী থানার ওসি আব্দুল মতিন। পরে তারা স্থানীয়দের শান্ত করে আনোয়ারকে উদ্ধার করে। এ সময় তারা সোহানকে ফেরত চান। এ সময় সোহানের মোবাইল ফোনে অপহরণকারিদের সঙ্গে কথা বলেন। এর পর তারা সোহানকে ছেড়ে দেয়।

বিষয়টি জানতে চাইলে এএসআই আনোয়ার বলেন, সোহানকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে আমি জানিনা। শনিবার রাতে আমার ডিউটি শেষে গ্রোগ্রাম বাজার পার হয়ে কিছুটা গেলে কয়েকজন এসে আমার সাথে কথা বলেন এবং সোহানের বিষয়ে জানতে চাই। এসময় অনেক লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পরে আমি প্রেমতলী কেন্দ্রের ইনচার্জকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। তবে রাতে সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে কেন গিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।

গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, রাতেই পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছিলাম। সোহানকে কারা অপহরণ করেছে সেটি তদন্ত করে বের করার জন্য বলেছি। এ সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার দ্রæত দাবি করেছি।

গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, কারা সোহানকে তুলে নিয়ে গিয়ে চাঁদা দাবি করেছে সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও গুরুত্বসহকারে দেখছেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে