শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

অদম্য মেধাবী সোহান উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায়

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ১৫ মে ২০২৪, ১২:৪৫
ছবি: যায়যায়দিন

বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১২৫৭ নম্বর পেয়ে উপজেলা সেরা হয়েছে সাকিবুল হাসান সোহান। উপজেলা সেরা হয়েও পড়াশোনা নিয়ে সে চিন্তিত। তিনবার নদী ভাঙনের শিকার সোহানের বাবা বাস করেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধে। টং ঘরে মনোহারি দোকান করে ইয়াতিম ছেলেকে পড়াশোনা করানোর খরচ নিয়ে চিন্তিত সোহানের বাবা।

সাকিবুল হাসান সোহান। সে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া গ্রামের হেলাল মাহমুদ বেপারির ছেলে। এবারের এস এস সি পরীক্ষায় সোহান ১৩০০ নাম্বারের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২৫৭ নম্বর পেয়ে উপজেলায় শ্রেষ্ঠ হয়েছে। সোহান খোর্দ্দ বলাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। সোহানের বয়স যখন ৫ বছর তখন তার মা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মারা যান।

সোহানের বাবা ৩ বার যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন বসতি গড়ে তুলেছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধে।স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের আগে সোহানের বাবার বাড়ি ছিল কাজলা কুড়িপাড়া চরে। সেখান থেকে যমুনা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তিনি বাড়ি করেন হাটশেরপুর ইউনিয়নের কামার পাড়ায়। সেখানে ১৫ বছরের বসতি গড়ে তোলার পর এ বসত বাড়িও তাদের যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়। এরপর জমাজমি ভিটে মাটি সবকিছু হারিয়ে তারা আশ্রয় নেন একই ইউনিয়নের হাসনাপাড়া গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে। এখানেই সোহানের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। নিরুপায় সোহানের বাবা হেলাল আগে সাইকেলে করে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এরপর তিনি তার বাড়ির পাশেই বেড়িবাঁধের উপর ছোট একটি দোকান ঘর করে সেখানে মনোহরী জিনিসপত্র বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। এদিকে উপজেলায় শ্রেষ্ঠ সোহান বুয়েটে পড়াশোনা করতে চায়। তার মা বাবার সংসারে অভাব অনটনের জন্য সোহান পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে।

সোহান বলেন, আমার ইচ্ছা ছিল আমি বুয়েটে পড়াশোনা করবো। কিন্তু আমার গরীব বাবার আয় দিয়ে সে স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা জানি না।

সোহানের বাবা হেলাল মাহমুদ বলেন, আমার গরীব ঘরে আমার ছেলে এতো ভালো রেজাল্ট করেছে তার জন্য আমি খুবই খুশি। তিনবার নদী ভাঙনের পর আশ্রয় নিয়েছি বেড়িবাঁধে। ছোট একটি দোকানের আয় দিয়ে সংসার চালানোই মুশকিল। এমতাবস্থায় ছেলের পড়াশোনা চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

খোর্দ্দ বলাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাফি বলেন, সোহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে তাকে বিদ্যালয়ের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য তার দেশের হিতাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তিদের সহযোগিতার প্রয়োজন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, সোহানকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উপজেলা প্রশাসন থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে