শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ফরচুন কারখানায় ভাংচুর, আহত ৪ শ্রমিক

বরিশাল অফিস
  ২৩ মে ২০২৪, ২৩:০৪
বরিশালে ফরচুন সুজ কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনের একাংশ-যাযাদি

বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীতে ফরচুন সুজ লিমিটেডের কারখানায় নিয়মিত বেতন ভাতা এবং ওভার টাইমের দাবিতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আনসারের গুলিতে ৪ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ হয়েছে। এতে এক পুলিশ সদস্যসহ অনেকে আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেল ৫ টার দিকে নগরীর কাউনিয়া বিসিক শিল্পনগরী কম্পাউন্ডে ফরচুন সুজ কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। কারখানাটি বিপিএলে ফরচুন বরিশাল টিমের মালিক ও বিসিক শিল্পনগরী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে- দুপুরের দিকে ফরচুন সুজ ফ্যাক্টরিতে বেতন দেয়া হচ্ছিলো। শ্রমিকদের দাবি তাদের দুইমাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কিন্তু তাদের বকেয়া বেতনের অর্ধেকটা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানায়। এ সময় ফরচুন সুজ ফ্যাক্টরিতে কর্তব্যরত আনসাররা তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালায়। তাতে শ্রমিকদের ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে। শ্রমিকরা তখন কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা করে। তাদের নিবৃত্ত করতে আনসাররা গুলি চালায়। এতে চারজন শ্রমিক আহত হয়।

আহত চারজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আনসারদের ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে শ্রমিকরা। একপর্যায়ে তারা আনসারদের ওপর হামলা চালায় এবং কারখানার গ্লাস ও গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। শ্রমিকরাও পাল্টা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এছাড়া ঘটনাস্থলে থাকা কমপক্ষে ১০টি যানবাহন ভাঙচুর করে শ্রমিকরা। বিকেলের এ ঘটনা চলে রাত পর্যন্ত। এ ঘটনায় কাউনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান আহত হন। ঘটনার পরে ফরচুনসহ আশেপাশের তিনটি কারখানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আন্দোলনকারী শ্রমিক নিপা বলেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিল প্রতি মাসের ৮ তারিখের মধ্যে বেতন দেবে। কিন্তু তা না দিয়ে এক মাসের বেতন পরের মাসের ২৫ তারিখেরও পরে দেয়। আমরা ফরচুন সুজের কাছে দুই মাসের বেতন পাব। আজকে সেই বেতন চাইতে গেলে কোম্পানি দুই মাসের বেতন না দিয়ে ১৫ দিনের বেতন দিতে রাজি হয়। এতে কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বেড় হয়ে যেতে চাইলে আনসার সদস্যরা বাধা দেন। তারা শ্রমিকদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায়ে গুলিও করেন আনসার সদস্যরা।

তবে ফরচুন সুজের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য (এপিসি) ইউসুফ আলী বলেন, শ্রমিকরা কারখানার কাছে বেতন পাবে। তারা আন্দোলনে নেমে প্রথমেই এসে অতর্কিতভাবে আমাদের আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। পুরো ক্যাম্পে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে মোবাইল, টাকা পয়সা নিয়ে যায়। পরে তারা ম্যাগাজিন রুমে হামলা চালাতে গেলে উপরের নির্দেশক্রমে আমরা ফায়ার করেছি।

এদিকে শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এমনকি কারখানার ভেতরে কিছু হওয়ার খবরও তাদের জানা নেই বলে দাবি করেন।

কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন- শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করা হয়নি। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান আহত হয়েছেন। সবশেষ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনদীপ ঘরাই এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে শ্রমিকদের ৬ সদস্যের দল নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য কারখানার কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায় বসেছেন বলে জানা গেছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে