বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র চলছে: সন্তু লারমা

স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি
  ২১ জুন ২০২৪, ১৮:২৪
১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র চলছে: সন্তু লারমা
সিএইচটি হেডম্যান সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখছেন সন্তু লারমা

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের একটি অংশ এটি বাতিলের জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে না পারলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব আরো হুমকির মধ্যে পড়বে। সেজন্য কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ আন্দোলনে হেডম্যান (মৌজা প্রধান) এবং কারবারি (গ্রামপ্রধান) দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো হবে। গ্রাম ও মৌজাবাসীকে সাথে নিয়ে এ আন্দোলনে সামিল হতে হবে।

শুক্রবার (২১ জুন) সকালে রাঙামাটি শহরের রাজদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সিএইচটি হেডম্যান সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এ কথা বলেন সন্তু লারমা।

সন্তু লারমা আরো বলেন, আগামী ২৬ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ এর গুরুত্বপূর্ণ ধারা উপধারা বাতিল সুপারিশের উপর হাইকোর্টের আপীল বিভাগে শুনানি হবে। এ শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করতে হবে। ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিল হলে পার্বত্য চুক্তি, জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদের আইন অস্তিত্বের হুমকিতে পড়বে ।

সন্তু লারমা আরো বলেন, ১৯৯৭ সালে যে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল সেটা যেন মানুষ ভূলে যায় সেজন্য শাসকগোষ্ঠী তথা সরকার ষড়যন্ত্র করছে। তার অংশ হিসেবে ২৬ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়নি। বরং চুক্তিকে ভূলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি কংজরি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চাকমা সার্কেল চীফ রাজা দেবাশীষ রায়, মং সার্কেল চীফ সাচিংপ্রুু চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য সুবির কুমার চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা, হেডম্যান জয়া ত্রিপুরা।

মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন,বর্তমান আওয়ামীগ সরকার বিএনপি সরকারের আমলের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ১৯০০ সালের শাসনবিধি কার্যকর আইন হিসেবে রায় পেয়েছে। কিন্তু সেই রায়কে কেন আবার রিভিউ চাওয়া হচ্ছে? কার এত আগ্রহ সেটা জানার বিষয়। রায়ের বিরুদ্ধে যাঁরা রিভিউ করেছে তারা সমতল এলাকা থেকে আসা পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসিত সেটেলার। হাইকোর্টে এদের উপস্থিতি দেখা যায় না। কিন্তু সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল এ রিভিউ নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তার এ ভূমিকা মনে হচ্ছে তিনি সরকারের কোন কিছু নয়। তিনি একজন সরকার বিরোধী। কারণ এটর্নি জেনারেল যে ভূমিকা নিয়েছে এটা সম্পুর্ন সরকার বিরোধী।

চাকমা সার্কেল চীফ রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এটা পার্বত্য চট্টগ্রামে জন্য হুমকি। এটি কোনভাবেই হতে দেয়া যাবে না। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত আন্দোলনের ডাক আসলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।

মং সার্কেল চীফ সাচিংপ্রু চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজন হলে আরো কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সম্মেলনের সভা শেষে চিংকিউ রোয়াজাকে সভাপতি শান্তি বিজয় চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যর তিন বছর মেয়াদী কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণা করেন সন্ত লারমা।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে