বরগুনা পাথরঘাটায় যৌতুকের দাবিতে শশুর বাড়ীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে শাহানা (২২) নামে এক গৃহবধুর। মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে মঙ্গলবার বেলা এগারোটার দিকে শশুর বাড়িতে গলায় ফাঁস দেয় শাহানা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহানা বাবা শহিদ প্যাদা জানান, বিয়ের পর থেকেই শাহানার শশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবি করতো। সেজন্য বিভিন্ন সময়ে দশটি গরু দেয়েছি। সবশেষ গত একমাস আগে আবারো পঞ্চাশ হাজার টাকার জন্য চাপ দেয় মেয়ের জামাই ইউনুস ও তার মা হালিমা। এসময় টাকা নিতে আমাদের বাড়িতে আসলে টাকা না দিতে পারায় আর শশুর বাড়ি যায়নি। গত সোমবার বিকেলে ইউনুসের বড় ভাই ইব্রাহিম আমাদের বাড়িতে এসে অনেক অনুরোধ করে শাহানাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়েই ইউনুস ও তার মা হালিমা মিলে মারধর করে। পরেরদিন মঙ্গলবার সকালেও দ্বিতীয় দফায় মারধর করে। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দেয় শাহানা।
জানা যায়, এর আগেও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ইউনুসের বড় ভাই ইব্রাহিমের স্ত্রী এসিড খেয়ে আত্মহত্যা করে।
বুধবার দুপুরে শাহানার বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির সামনে নতুন কবরের কাছে শাহানার আড়াই বছরের ছেলে সাইমুনকে কান্নাকাটি করতে। শাহানার মা পারুল বেগম জানান, সাইমুন মায়ের কাছে যেতে চাচ্ছে। কিছুতেই সান্ত্বনা দিয়ে রাখা যাচ্ছে না। কবরের কাছে গিয়ে মাটি খুঁড়ে মাকে কবর থেকে উঠানোর জন্য সকাল থেকে কয়েকবার কবরের কাছে গেছে।
তিনি বলেন, একদিকে মেয়ে হাড়ানোর শোক অপরদিকে ছোট্ট নাতির এমন আহাজারি, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমি আমার মেয়েকে আত্মহত্যার প্ররোচনা কারি দের বিচার চাই।
অভিযুক্ত ইউনুসের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পাশের বাড়িতে থাকা ইউনুসের বড় ভাই ইব্রাহিমের স্ত্রী মরিয়ম জানান ঘটনার দিন সকালে শাহানার সাথে ইউনুসের ঝগড়া হয়েছে। তবে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আল মামুন জানান, শাহানা আত্মহত্যা করার বিষয়ে জানতে পেয়েছি। বরিশালে শাহানার ময়নাতদন্ত হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যাযাদি/ এস