মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলা, আহত ২০

চাঁদপুর প্রতিনিধি
  ০১ আগস্ট ২০২৪, ২৩:৪১
চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলা, আহত ২০
ছবি-যায়যায়দিন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে চাঁদপুরে ‘রিমেম্বার দ্য হিরোস’ কর্মসূচি পালন করতে নেমে ছাত্রলীগের ধাওয়া ও হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী। প্রায় আধাঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা ছুটাছুটি করতে থাকলে পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকা জুড়ে হামলার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগ লাঠি সোটা দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। আহত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দিকে চলে যায়।

স্থানীয় লোকজন জানায়, বিকেল ৩টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের ষোলঘর এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে তাদেরকে একাধিকবার ধাওয়া করে ছাত্রলীগ। তাদের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় কাউন্সিলর কবির চৌধুরী। ধাওয়া খেয়ে আবারও শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয় শহরের বাসস্ট্যান্ড ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে। সেখানে তারা স্লোগন দিয়ে অবস্থান নেয়।

বিকাল ৫টার দিকে ছাত্রলীগের দেড়শতাধিক কর্মী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসে প্রবেশ করে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা অতর্কিতভাবে হামলা করে শিক্ষার্থীদের ওপর। পুলিশের সামনেই তারা লাঠি সোটা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে শহরের পশ্চিম দিকে নিয়ে যায়। ওই সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলের বিপরীত দিকে অবস্থান করেন। শেষ মুহুর্তে পুলিশ এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে।

আন্দোলনকারী ছাত্রীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছে। তারা আমাদের চুল ধরে টানাটানি করেছে। পুলিশ থাকা সত্বেও ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাদের গায়ে হাত দিয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে ২০ মিনিট সময় চেয়েছি। পুলিশের উপস্থিতিতে তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর কবির চৌধুরীকে বক্তব্যের জন্য তার ব্যাক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। যে কারণে তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে ঘটনার পরে পুলিশের একাধিক গাড়ী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল এবং পুরো শহরে টহল দেয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল এমরান খাঁন বলেন, ঘটনার পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে টহল জোরদার করা হয়েছে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে এখন আর ছাত্ররা নেই। এখানে অন্য অনেকে ডুকেগেছে। যারা বিশৃঙ্খলা তৈরী করার চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন ধরণের সরকার বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে এবং উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি তৈরী করছে। তাদের মধ্যে এখন কথা কাটাকাটি এবং ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ বিষয়টি বুঝতে পারছে আবার কেউ বুঝতে পারছে না। এমন অবস্থায় আজকে এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি এবং তাদেরকে চলে যাওয়ার জন্য বলেছি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে