আমার সব শেষ হয়ে গেল, আমার বেচেঁ থাকার আর ঠিকানা রইলো না। একথা বলতে বলেতে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন খুলনায় নিহত পুলিশ কনষ্টেবল সুমন কুমার ঘরামী স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। শনিবার দুপুরে স্বামীর মরদেহ নিয়ে বাগেরহাটের কচুয়ায় নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ লাইনে এ দৃশ্য দেখা যায়।
শনিবার সকালে নিহত কনষ্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর বয়রা ইসলামীয়া কলেজ রোডস্থ বাসায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। আশপাশের লোকজন জানান, পরিবারের সদস্যরা পুলিশ লাইনে অবস্থান করছে। সেখানে গিয়ে কথা হয় সুমনের শশুর নবীন বিশ্বাসের সাথে।
তিনি কেদেঁ বলেন একমাত্র নাতনী ছয় বছরের স্নিগ্ধা সারারাত কেঁদেছে। কিছুক্ষণ পর পর বাবা বাবা বলে চিৎকার করছে। সুমনের আদরের ধন ছিল স্নিগ্ধা। ওকে নিয়ে বাবার অনেক স্বপ্ন ছিলো। আজ সব শেষ হয়ে গেল, ওর ভবিষ্যত কি হবে। লাশ বাহী গাড়ীর পাশেই একটি মাইক্রোবাসে নানার কোলে বসেছিলো শিশু স্নিগ্ধা। শিশুটি চিৎকার করে বলছিলো ‘আমি এই গাড়িতে যাবোনা, আমি বাবার গাড়িতে যাবো। আর স্নিগ্ধার মা মিতু বিশ্বাস উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা, আত্মীয়স্বজন যাকেই পাচ্ছেন তাকে জড়িয়ে ধরে, পায়ে ধরে স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন। তার আহাজারি দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারেনি আত্মীয়স্বজন ও উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কনষ্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর পোষ্টমার্টেম শেষে মরদেহ পুলিশ লাইনে আনা হয়। সেখানে তিনিসহ কেএমপির উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও সহকর্মীরা গার্ড অব অনার প্রদান ও ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
নিহত সুমন কুমার ঘরামী সৎকারের জন্য নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং পরিবারের কাছে সহায়াতা স্বরূপ ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। এরপর সুমনের শ^শুর নবীন বিশ্বাস ও শাশুড়ি স্বপ্না রানী মরদেহ গ্রাহণ করেন। এখান থেকে মরদেহ বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কিসমত মালিপাটন গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যায় সৎকার করা হয় বলে পরিবার সূত্রে জানাগেছে।
যাযাদি/ এম