রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

ভৈরবে নদী ভাঙ্গনে ১৩০ মিটার জায়গা বিলীন হয়ে গেছে

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:২২
ভৈরবে নদী ভাঙ্গনে ১৩০ মিটার জায়গা বিলীন হয়ে গেছে
ছবি : যায়যায়দিন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদীতে ভয়াবহ ভাঙ্গনে ১৩০ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই ভাঙ্গনের কারনে হুমকির মুখে পড়েছে বিএডিসি'র দুটি সার গুদাম ও অফিস, যমুনা অয়েল কোম্পানীর তেলের ডিপো ও অফিস এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের সেতু।

আজ রোববার ভোররাত তিনটার দিকে নদীর পাড়ের রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন সার গুদাম ও যমুনা তেলের ডিপো এলাকায় ভাঙ্গনের ঘটনাটি ঘটে। এসময় বিএডিসির সার গুদামের সামনে দরিদ্রদের বসতবাড়ী ১৫/২০ টি ঘর ও যমুনা অয়েল কোম্পানীর একটি অফিসের অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ভারপ্রাপ্ত) রেদোয়ান আহমেদ রাফি, কিশোরগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আতিকুল গনি, বিএডিসি (সার) কিশোরগন্জের যুগ্ম - পরিচালক ইকবাল মোহাম্মদ মোত্তাকিন, যমুনা অয়েল কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক এলাহী, ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার মোঃ শহীদুল্লাহ, ভৈরব পুলিশ সার্কেলের এএসপি মোঃ দেলুয়ার হোসেন খাঁন, থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

নদীর পাড়ের বাসিন্দা হোসনা বেগম বলেন, রোববার গভীর রাত তিনটার দিকে লোকজনের হৈচৈ চিৎকার শুনে আমি ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি আমার ঘরের অর্ধেক নদীগর্ভে চলে গেছে। এসময় কোনরকম জীবন নিয়ে পরিবারসহ ঘর থেকে বের হয়ে প্রাণ বাঁচায়।

এবিষয়ে কিশোরগন্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আতিকুল গনি জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে নদী এলাকা পরিদর্শন ও পরীক্ষা করে জেনেছি ১৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গন এলাকায় নদী গভীরতা ৫/৭ মিটার। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গনরোধে আমরা আজ রোববার বিকেল থেকে জিও ( বালির বস্তা) ফেলা শুরু করব।

ভৈরব বিএডিসি'র সহকারী পরিচালক ( সার) শিপন সাহা বলেন আজ ভোরে খবর পেয়ে আমি অফিসে এসে ঘটনা দেখি। পরে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি অবহিত করি। তিনি বলেন আমাদের দুটি সার গুদামে ৯ হাজার ৭৩ মেঃ টন নন - ইউরিয়া সার মজুত আছে, যার সরকারী মূল্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা। ভাঙ্গন এলাকাটি গুদামের ৩০০ গজের মধ্য এসে গেছে। গুদামটি নদী ভাঙ্গনে পড়লে সরকারের ১৮ কোটি টাকা ক্ষতি হবে।

যমুনা অয়েল কোম্পানীর ভৈরব অফিসের সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ মতিউর রহমান জানান, আমাদের ডিপোতে ১৮ লাখ লিটার জ্বালানী তেল মজুত আছে যার মূল্য ১৮ কোটি টাকা। নদী ভাঙ্গনে আমাদের একটি অফিস অর্ধেক ভেঙ্গে গেলেও ডিপোর ক্ষতি হয়নি। তবে ভাঙ্গন এলাকা বৃদ্ধি পেলে মারাত্মক ক্ষতি হবে।

ভৈরব রেলওয়ের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুল হাসান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি অবহিত করেছি। তিনি বলেন মেঘনা নদীর ওপর ২৯ নং রেলওয়ে সেতু থেকে ভাঙ্গন এলাকা সম্ভবত ১০০০ হাজার গজ দূরে হবে।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) রেদোয়ান আহমদ রাফি বলেন,ভাঙ্গন এলাকাটি অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক গুলো সরকারী স্থাপনা রয়েছে। ভাঙ্গন রোধে আমরা দ্রুত এর ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে