বিদেশের মতই পার্বত্য এলাকার রাঙ্গামাটি নানিয়ারচরে গাছে গাছে হলুদ রঙের কমলা ঝুলছে। পাহাড়ের কোল ঘেসে সমতল ভূমিতে গড়ে উঠেছে মিস্টি কমলাবাগান। সম্প্রতি রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষন ইউনিয়নের ১৭ মাইলে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেল।
আকারে বড়, রসাল আর মিষ্টি স্বাদের কমলার ফলন হচ্ছে পাহাড়ের বেশ কিছু স্থানে। কৃষিবিদেরা বলছেন, কমলার জন্য বিশেষ উপযোগী আবহাওয়া ও মাটির মান খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করে ফলের মিষ্টত্ব, আকার ও ফলন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশ কিছু স্থানে কমলা চাষ হচ্ছে।
তবে সব এলাকার কমলা মিষ্টি ও আকারে বড় হয় না। তাঁদের মতে, রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষ্যং ও বুড়িঘাট ইউনিয়নের শৈলেশ্বরী, গবছড়ি, যাদুখাছড়া ও নব কার্বারিপাড়ায় ভালো কমলার ফলন হচ্ছে। উপজেলাটির কয়েকটি গ্রামে মিষ্টি কমলা চাষ করছে। বিদেশী ফল হওয়া সত্বেও এদেশের পাহাড়ের মাটিতে ফলটির খুব ভালো আকার ধারন করেছে।
নানিয়ারচরের সাবেক্ষন ইউনিয়নের ১৭ মাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কমলাবাগানটি সমতল ভূমিতে করা হয়েছে । পরিবেশ ও আবহাওয়া বেশ ঠান্ডা। এমন আবহাওয়াই কমলা চাষের উপযোগী।
কমলা চাষি সুদত্ত চাকমা বললেন, তাঁর বাগানে এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে পুরো কমলাবাগানটি তিনি ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাগান থেকেই কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। বাগানটিতে এক হাজারের উপরে গাছ রয়েছে। এই বছরের বন্যায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেশ লাভবান তিনি।
নানিয়ারচরে কমলা চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন অনেকেই। অনেকেই জাম্বুরা, কলা, আম ও কাঁঠাল চাষ ছেড়ে কমলা চাষে বিনিয়োগ করছেন। তাঁদের ভাষ্য, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করেই তাঁরা কমলা চাষ করছেন। সে জন্য নানিয়ারচরের কমলার কদরও বেশি। আকারে বড় হওয়ায় দামও পাচ্ছেন বেশ। নভেম্বর মাসের শুরুতে কমলা পাকা শুরু হয়। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত গাছে কমলা থাকে।
রাঙামাটি নানিয়ারচর কৃষি কর্মকর্তা তপু আহমেদ জানান, উপজেলায় চলতি মৌসুমে কমলা ১২৫ হেক্টর জমিতে ফলন করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৮ মেঃ টন ফলনের ধারনা করা হচ্ছে,সেই হিসাবে ১০০০ মেঃ টন ফলন হতে পারে।
তিনি বলেন, নানিয়ারচরের মাটিতে বিশেষ কিছু গুণ রয়েছে, যা কমলা চাষের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি, গুইমারা এবং বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে কমলা হচ্ছে। কিন্তু ফলন আশানুরূপ নয়। তবে এসব এলাকায় কমলার ফলন বাড়ানো ও গুণগত মান উন্নত করার চেষ্টা তাঁরা করে যাচ্ছেন।
যাযাদি/ এসএম