বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

মুরাদনগরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পিঠা উৎসব

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:০৫
মুরাদনগরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পিঠা উৎসব
ছবি: যায়যায়দিন

"নতুন ধানে, নতুন প্রাণে, চলো মাতি পিঠার গানে" এই স্লোগানে কুমিল্লার মুরাদনগরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদেরকে নিয়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে মুরাদনগর সেন্টার স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে এই পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে পিঠা উৎসবটি উদ্বোধন করেন। তবে এই পিঠা উৎসবের ভিন্নতা এনে দিয়েছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের “প্রতিভা” স্কুলের উপস্থিত দর্শকরা। তারা আর সবার মতো না, বলতে গেলে যারা সমাজে উপেক্ষিত তাদের জন্যই এ উৎসব।

আলাদা ধরনের এ উৎসবে সাজ পিঠা, শিশ পিঠা, ঝিনুক পিঠা, জামাই পিঠা, খির সন্দেশ, সুজি পিঠা, তেলের পিঠা, পুলি পিঠা, দুধ পুলি, পায়েস, নারকেল নাড়–সহ অন্তত ২৫-৩০ প্রকারের পিঠার আয়োজন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের কাছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হরেক রকমের পিঠা-পুলি-পায়েস পরিচিত করানোই মূল উদ্দেশ্য বলে জানায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীসহ তাদের অবিভাবকরা। প্রতিভা স্কুলের রুকন কুমার, জুনাইদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আকার ইঙ্গিতে অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করেন, এ উৎসবে আসতে পেরে তাদের খুবই আনন্দ হচ্ছে। নতুন নতুন মজাদার পিঠা খেয়ে তাদের ভালো লাগছে।

অভিভাবক নাদিরা আফরিন, রহিমা বেগম, ফাতেমা আক্তার, মনি আক্তার ও ঝুমা সাহার সাথে কথা হলে কর্তৃপক্ষের এই ব্যতিক্রমী পিঠা উৎসবের আয়োজন করায় তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের আয়োজন আমাদের বাচ্চাদের জন্য অনেক উৎসাহের। বাচ্চারা বিভিন্ন পিঠার সাথে পরিচিত হতে পেরেছে এবং বাচ্চারা অনেক আনন্দ পেয়েছে। তারা আরো জানান, এই বিদ্যালয়টি হওয়ার পরে তাদেরকে আর অর্থ ব্যয় করে শহরের স্কুলে যেতে হচ্ছেনা। বিশেষ করে আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের লোকজন তাদের বাচ্চাদেরকে এখানে নিয়ে আসতে পারছেন। তাছাড়া শিক্ষার্থী অনুযায়ী জায়গা স্বল্পতার কথাও জানান অভিভাবকরা।

পাশাপাশি একজন স্পিচ থেরাপিস্ট দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।

স্কুলটির পরিচালকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা শারমিন ফাতেমা জানান, এ ধরনের আয়োজন করতে পেরে আমারা খুবই খুশি। কারণ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বাংলার হরেক রকমের পিঠার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।

পিঠা উৎসবে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সানজিদা আক্তার নূপুর, সমাজসেবা কর্মকর্তা বরুন দে, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, সেন্ট্রাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুস সাত্তার, প্রতিভা স্কুল পরিচালনা কমিটির কোষাধক্ষ্য সুফি আহমেদ, বিএডিসি'র উপ সহকারী প্রকৌশলী কাউসার আল মামুন, ফিজিওথেরাপিস্ট এন এম মাহমুদুল হাসান প্রমূখ। স্কুলের মাঠে এই পিঠা উৎসব উপলক্ষে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাক, শিক্ষক, সাংবাদিক, সরকারী কর্মকর্তাদের একটি মিলনমেলা ঘটে।

যাযাদি/ এমএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে