ফেনীর পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়া ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ সেই নারীর অবশেষে ঠাই হলো মিরপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যসে তাকে ভবঘুরে হিসেবে শনাক্ত করেছেন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে তাকে উদ্ধার করে পরশুরাম থানা পুলিশের উদ্যোগে মিরপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে বুধবার (০২ এপ্রিল) পরশুরাম পৌর এলাকার খোন্দকিয়া এলাকায় ওই নারী রাস্তায় প্রসব ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ওই নারী এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
তারপর থেকে সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালেই ছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে নার্স ও চিকিৎসককে ফাঁকি দিয়ে ফের পৌর এলাকার খন্দোকিয়া এলাকায় গিয়ে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করতে থাকেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। মধ্যবয়সী এই প্রসূতি ও নবজাতক সুস্থ আছে। শুদ্ধ ভাষায় কথা বললেও এই নারী নিজের নাম-ঠিকানা কিছুই বলতে পারছেন না। শুধু জানিয়েছেন, তার নাম শামীমা, পিতার নাম আনোয়ার হোসেন, মাতার নাম আঞ্জুমান স্বামীর কথা জানতে চাওয়া হলে জানান, স্বামী বাইরে আছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন গত ২এপ্রিল স্থানীয় লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কন্যা সন্তানের জন্মদেন। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালেই ছিলেন গত কদিন আগেই সে আবারো খোন্দকিয়া গ্রামে চলে গেলে তাকে উদ্ধার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভবঘুরে হিসেবে সনাক্ত করে পুলিশ হেফাজতে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম বলেন পুলিশ হেফাজতে তাকে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পুলিশের একটি টিম ঢাকার মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন মানসিক ভারসামহীন এক নারী হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয়টি তার নজরে আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন মাধ্যমে তার পরিচয় জানার জন্য চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। খোন্দকিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভবঘুরে হিসেবে সনাক্ত করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজতে তাকে মিরপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
যাযাদি/ এসএম