চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) মূল ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ করছেন কয়েক’শ পোশাক শ্রমিক।
তিন মাস ধরে বেতন না পেয়ে তারা বিক্ষোভে নামতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় সিইপিজেডের দুই নম্বর সড়কের থিআনিস এ্যাপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মূল ফটক শ্রমিকরা অবরুদ্ধ করে রাখায় সিইপিজেডে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। ভেতরে থাকা পণ্যবোঝাই ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়েছে।
জানা গেছে, থিয়ানিস অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে কারখানাটি সিইপিজেডের ৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর সড়কে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন আনিসুর রহমান খান। এ কারখানায় কর্মরত আছেন প্রায় ৭শ’ শ্রমিক। গত মার্চ মাস থেকেই তাদের বেতন বকেয়া। এরইমধ্যে পাঁচবার বেতন পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করেও পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ।
সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবহান বলেন, ‘কারখানাটির প্রোডাকশন-এক্সপোর্ট নেই। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। গত মার্চ মাসের বেতন দেওয়ার কথা ছিল গতকাল (বুধবার)। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে দিতে পারেনি। আগামী সোমবারে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। শ্রমিকরা চাচ্ছে, মালিকপক্ষ সামনাসামনি এসে বলুক। কারণ এর আগেও একাধিকবার তারিখ ফেল হয়েছে। এখন বেপজার সামনে অল্প কয়েকজন শ্রমিক আছেন।’
শিল্পাঞ্চল পুলিশের চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘মার্চ মাস থেকে বেতন দিচ্ছে না। গত বুধবার পর্যন্ত পাঁচবার সময় নিয়েছে, কিন্তু বেতন দেয়নি। কারখানায় প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ শ্রমিক কাজ করে। বেতন না পেয়ে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
আমরা এবং বেপজা কর্তৃপক্ষ কয়েকবার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। উনি কোনোসময় কল রিসিভ করেন না, কোনোসময় টাইম দিয়ে দেখা করেন না, আবার কখনও শুধু সময় নেন। সর্বশেষ বললেন উনার ছেলে হার্ট অ্যাটাক করেছে। কিন্তু এটার সঙ্গে তো শ্রমিকের বেতনের কোনো সম্পর্ক নেই। উনি ইচ্ছে করে আনরেস্ট তৈরি করছেন কী না সেটা আমরা দেখছি।’
এদিকে, সকাল থেকে ২ নম্বর গেট এলাকার অবস্থান কর্মসূচির কারণে বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট হয়। বিশেষ করে মোড় থেকে অক্সিজেনগামী সড়কে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে এবং ভোগান্তিতে পড়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হওয়া লোকজন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, কর্তৃপক্ষ তাদের ৩ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না। বিভিন্ন সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সবশেষ বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব হোসেন বলেন, সকালে জড়ো হয়ে শ্রমিকেরা কর্মসূচি পালন করে। পরে বুঝিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরানো হয়েছে।
যাযাদি/