বারসিক এর উদ্যোগে নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা উপজেলা তারানগর গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো ‘শতবাড়ি কার্যক্রম’-এর সদস্যদের নিয়ে এক অভিজ্ঞতা সহভাগিতা সভা। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে, যেখানে শতবাড়ির সদস্যরা তাদের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা, অর্জন এবং চ্যালেঞ্জগুলো একে অপরের সঙ্গে সহভাগিতা করেন। সভায় মথি ঘাগ্রা এর সভাপতিত্বে ও আল্পনা নাফাক এর সঞ্চালনায় একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার লক্ষ্য উদ্দেশ্য তুলে ধরেন বারসিক এর উপজেলা সমন্বয়কারী গুঞ্জন রেমা। আলোচনার শেষাংশে মুন্না রংদী এর পরিচালনায় শতবাড়ী গুলিকে সমৃদ্ধকরণের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ন করা হয়।
শতবাড়ি কার্যক্রম বারসিকের একটি ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ, যার লক্ষ্য হলো প্রতিটি পরিবারকে তাদের নিজস্ব জ্ঞান, চর্চা ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও স্বনির্ভর জীবনের পথে এগিয়ে নেওয়া। কৃষি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক সহায়তার বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই কার্যক্রমে বর্তমানে কলমাকান্দায় ৩২টি পরিবার সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজ নিজ বাড়ির কৃষি উদ্যোগ, বীজ সংরক্ষণ, পারিবারিক পুষ্টি বাগান, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সামাজিক সহায়তার বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তারা জানান, শতবাড়ি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ফলে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, জীবিকায় এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন এবং পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে তৈরি হয়েছে এক ধরনের সচেতনতা।
সভাপতির বক্তব্যে মথি ঘাগ্রা jaবলেন “এই সভায় এসে বুঝলাম, আমরা প্রত্যেকে অনেক কিছু করছি কিন্তু আলাদা আলাদা। আজ একত্রে সহভাগিতা করে মনে হলো, আমরা সবাই মিলে অনেক বড় কিছু গড়তে পারি।”
আজকের এই অভিজ্ঞতা সহভাগিতা সভা প্রমাণ করেছে যে, স্থানীয় জ্ঞান, উদ্যোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতাই টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি হতে পারে। শতবাড়ি কার্যক্রমে যুক্ত পরিবারগুলো শুধু নিজেদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনেনি, বরং একটি পরিবেশবান্ধব, সচেতন ও সম্পদনির্ভর সমাজ গঠনের পথে এগিয়ে চলেছে। সভায় অংশগ্রহণকারীদের সরল কিন্তু গভীর অভিজ্ঞতাগুলো ছিল একেকটি অনুপ্রেরণার উৎস, যা অন্য পরিবারগুলোকেও উদ্বুদ্ধ করবে নিজেদের জীবনযাত্রা পরিবর্তনে।
যাযাদি/ এসএম