সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
রাতভর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ

মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ১১ মে ২০২৫, ১৫:০৬
মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর ওপর হামলা
থানা ঘেরাও করে রাতভর বিক্ষোভ। ছবি: যায়যায়দিন

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী কাজল দেবনাথের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পরে সহপাঠীরা।

অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে টাঙ্গাইল সদর থানা ঘেরাও করে অবস্থান রাতভর বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গতকাল শুক্রবার ১০ মে বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় টাঙ্গাইল শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি খাবারের দোকান এ ঘটনা ঘটে ।

ভুক্তভোগী ও সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থী কাজল দেবনাথ তার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বন্ধুকে নিয়ে উক্ত রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে গেলে তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে আসে।

কাজল তাদের নিজের বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাসার জবাব দিলে একজন তার মুখে চড়-থাপ্পড় মেরে চলে যান মটরসাইকেলে করে।

আর এই ঘটনার সময় ছবি তুলে রাখা হয়।কিছু সময় পর তারা আবার ফিরে এসে ছবিগুলো ডিলেট করতে বলে এবং কাজলকে হুমকি দেয়। এরপর তারা মোটরসাইকেলের চাবি ও কাচের বোতল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।

এতে কাজল গুরুতর আহত হন এবং সারা শরীরে জখমের সৃষ্টি হয়। আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গুম, খুনসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

ঘটনার পর কাজল দেবনাথ টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং নিজে উপস্থিত হয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

সাধারণ ডায়রিতে কাজল উল্লেখ করেন, তিনি বর্তমানে প্রাণনাশের হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তার দাবি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সাক্ষী রয়েছেন, যারা প্রয়োজনে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করতে পারবেন।

আরো জানান, ওদের কারো সাথে আমার পূর্ব পরিচয় নেই। ধারণা করছি হাত ধোয়ার সময় পানির ছিটা বা শরীরে হাল্কা ধাক্কা লাগতে পারে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি তাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করি এবং তার সুষ্ঠু বিচার চাই।

বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”

টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) তানবীর আহম্মেদ জানান, ‌ ‌‌অভিযোগপত্র আমার কাছে আছে । আসামি আছে, তদন্ত হচ্ছে, তারা মামলা করলে মামলা রেকর্ড হবে। আমাদের এইদিক দিয়ে চাওয়ার কোনো কমতি নেই। এখন বিষয় হচ্ছে আপনারা সমাধান কিভাবে চান।

ঘটনার প্রতি সংহতি জানিয়ে থানা‌ ঘেরাও ও বিক্ষোভে সন্ধ্যা ৭ টায় রাত ১‌ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের বহনকারী আরও একটি বাস থানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

রাতভর ন্যায় বিচারের দাবিতে স্লোগানে উত্তাল থাকে টাঙ্গাইল সদর থানা। এরপর শহরে অভিযান চালিয়ে মধ্যেরাতে অভিযুক্ত শুভ ও মাহিনকে থানায় হাজির করে পুলিশ।

এরপর ভোর ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও থানায় কর্তব্যরত পুলিশ ও জেলা পুলিশের সহায়তায় মুচলেকা (ভবিষ্যতে এরকম কাজের পুনরাবৃত্তি করবে না মর্মে) ও‌ ক্ষমা চেয়ে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে