খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হুমায়ন কবিরকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। নারী সহকর্মীর মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও (পর্ণগ্রাফি) পাঠিয়ে নিপীড়ন করার অভিযোগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব-০১ শাখা হতে উপ সচিব মাসুদ আহমেদের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার বদলির এ আদেশ জারি করা হয়।
২২ মে’র মধ্যে তাকে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ২২ মে অপরাহ্নে তিনি রামগড় কর্মস্থল হতে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হয়েছেন মর্মে গণ্য হবেন।
ভুক্তভোগী নারী যুব উন্নয়নের ক্রেডিট এন্ড মার্কেটিং অফিসারের অভিযোগে জানা যায়, রামগড় উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তার ব্যক্তিগত মোবাইলের হোয়াটস অ্যাপে অনেকগুলো অশ্লীল ভিডিও (পর্ণগ্রাফি) পাঠায়। এছাড়াও নানাভাবে তাকে নিপীড়ন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ওই নারী কর্মকর্তা খাগড়াছড়ি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু কোন প্রতিকার পাননি। অভিযোগ রয়েছে,খাগড়াছড়ির উপ পরিচালক অভিযুক্ত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে রক্ষা করতে অভিযোগটি ধামাচাপা দেন। ঐ পর্ণগ্রাফির ভিডিও‘র কপি পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসকের নজরে আনেন।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন সাংবাদিকদের বলেন, যুব উন্নয়ন অফিসারের বিরুদ্ধে পর্ণগ্রাফিসহ অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগ লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া, রামগড় পৌরসভার ওর্য়াড কাউন্সিলরের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, এমন গর্হিত কাজের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তাৎক্ষণিক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়।
জানা য়ায়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় রামগড় উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর শনিবার (১৭ মে) অভিযুক্ত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরকে শাস্তিমূলক বদলির আদেশ জারি করে। পর্ণগ্রাফি অপরাধের অভিযোগ ছাড়াও ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে ভুয়া প্রশিক্ষণার্থী দেখিয়ে ভাতার টাকা আত্মসাৎ, প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা কম দেয়া, যুব ঋণ বিতরণে ঘুষ গ্রহণসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, নারী সহকর্মীকে অশ্লীল ভিডিও পাঠানোর ব্যাপারে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এ ভিডিও পাঠাইছি কি না মনে নেই, হয়তো অজান্তে পাঠিয়েছি।’