‘ঈশ্বর থাকেন ঐ ভদ্র পল্লীতে, জেলেপাড়ায় তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না’- মানিক বন্ধ্যপাধায়। অবহেলিত গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নে তাকালে উক্তিটি উপলদ্ধি হয়। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কিশোরগাড়ি ইউনিয়নে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি।
উপজেলার করতোয়া নদীর ওলির ঘাটে কোনো একটি সেতুর অভাবে ৫টি গ্রামের মানুষদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওইসব গ্রামের মানুষদের একমাত্র চলাচলের ভরসাই হচ্ছে একটি বাঁশের সাঁকো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই উপজেলার গণকপাড়া গ্রামের আখিরা নদীর ওলির ঘাটে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওইসব গ্রামের স্কুল-কলেজ ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের চলাচল করতে হয়।
ঘাটে একটি ডিঙ্গি নৌকা থাকলেও সেটি পারাপরের কোন মাঝি নেই। স্থানীয়রা অনেক সময় নিজেরাই রশি টেনে যাতায়াত করে। আবার নৌকাটি পুরোপুরি কিনারে চাপে না। নৌকা থেকে নেমে হাঁটুপানি ডিংগিয়ে উঠতে হচ্ছে কিনারে। ফলে পারাপারে ভোগান্তি দৈনন্দিন বিষয়।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া, গণকপাড়া, জাফর, জাইতর গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষ এপার থেকে ওপারে চলাচলের জন্য শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা ব্যবহার করে।
ঘাট পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটের দূরত্ব ২ কিলোমিটার। তবে সেতু না থাকায় অতিরিক্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তা চলাচল করতে হয়। নদীতে পানি বেড়ে গেলে অনেক সময় পারাপারের জন্য নৌকার ব্যবস্থাও থাকে না। তখন এলাকার মানুষের ভোগান্তির সীমা থাকে না।
ফজলু মিয়া জানান, ওলির ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী।
তবে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন একাধিকবার কথা দিলেও আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি। এই পথে চলাচলকারী পথচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, দুরে কোনো হাট-বাজারে যেতে হলে সাইকেল কাঁধে করে সাঁকো পার করতে হয়। ভয় লাগে কখন জানি পড়ে যাই। এই নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে অত্র এলাকাসহ আশেপাশের গ্রামবাসী ভোগান্তি লাঘব হবে। এব্যাপারে কিশোরগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই ঘাটে একটি সেতু নির্মিত হলে অল্প সময়ের মধ্যে পলাশবাড়ী শহর ও ঘোড়াঘাটে খুব সহজেই যাতায়াত করা যাবে। তখন এলাকার উন্নয়ন তরান্বিত হবে।
পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী তখন চক্রবর্তী বলেন, ওই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব ফাইল জরুরী ভিত্তিতে মূল অফিস থেকে সার্ভে করা হয়েছে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন আশা করছি।