সারাদেশ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সাঙ্গু নদীতে জেগে উঠা চরে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী জেলে সম্প্রদায়ের গড়ে তোলা গণশৌচাগারে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে সাঙ্গু নদীর পানি। আবার অনেকে নদীর চরের খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। এতে একদিকে যেমন নদীর পানি দূষিত হয়ে জলজ প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে অন্যদিকে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগবালাই।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের মনেয়াবাদ গ্রামের দোকান ঘাটা এলাকায় বসবাসকারী জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন শুষ্ক মৌসুমে সাঙ্গু নদীতে জেগে উঠা চরে অস্থায়ীভাবে গণশৌচাগার স্থাপন করেন। সেখানকার প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি জেলে পরিবার দিনের বেলায় ওই গণশৌচাগারে ও রাতের বেলায় চরের খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করেন। প্রতিবছর স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা গণশৌচাগার স্থাপনে বাধা প্রদান করলেও সেটি অমান্য করে আসছে তারা।

পুরানগড় ইউনিয়নের মনেয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা আনিসুল ইসলাম বলেন, নদীর চরে গণশৌচাগার স্থাপনের ফলে নদের মাটি, পানি ও বায়ু দূষিত হচ্ছে। আর খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগের ফলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও এসব মলমূত্র জোয়ার-ভাটায় নদীর পানিতে গিয়ে মিশছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগবালাইয়ের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

ওই এলাকার জেলে সুভাষ জলদাশ বলেন, আমাদের এলাকাটি গণবসতিপূর্ণ। ফলে এখানকার পরিবারগুলোর বসবাসের জায়গা খুবই নগণ্য। তাই জেলের সম্প্রদায়ের লোকজন একপ্রকার বাধ্য হয়ে সাঙ্গু নদীতে জেগে উঠা চরে গণশৌচাগার স্থাপন করেন। কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে গণশৌচাগার স্থাপন করার কথা থাকলেও সেটি এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। সরকারিভাবে এ এলাকায় একটি গণশৌচাগার স্থাপনের মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব।

পুরানগড় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদ আহমদ বলেন, এ নদীর পানি হাজার হাজার মানুষ ব্যবহার করছে। এমন জায়গায় গণশৌচাগার স্থাপন করা অত্যন্ত দুঃখজনক। তারপরও ওই এলাকার বাসিন্দারা যদি ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন তাহলে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে একটি গণশৌচাগার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করব।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, এ বিষয়ে আমি মোটেও অবগত ছিলাম না। আজ আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদী ও জীবন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক মানুষের জীবন ও জীবিকা এ নদীর উপর নির্ভরশীল। এমন জায়গায় গণশৌচাগার স্থাপন করা একদমই উচিত হয়নি। শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে সাঙ্গু নদীকে দূষণমুক্ত করা হবে।