নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সরকারিভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে রুগ্ন ও নিম্নমানের গরু বিতরনের অভিযোগ উঠেছে। রুগ্ন গরু নিতে অস্বীকৃতি জানালে সুবিধাভোগীদের গরু নিতে ২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে নোটিশ জারি করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
নিম্নমানের গরু হওয়াই ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে তাতেও মেলেনি প্রতিকার। জীবনমান উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সরকারের দেয়া এসব গরু পেয়ে উপকার নয়, বরং ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সুবিধাভোগীরা।
জানা গেছে, সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গরু হৃষ্টপুষ্ট প্যাকেজের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তত্ত্বাবধানে উপজেলায় ৮ জন উপকারভোগীর মাঝে গরু বিতরণের কথা ছিল। গরুর সঙ্গে পশুখাদ্য, খুঁটি, টিন ও ফ্লোর ম্যাটও দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে বিতরণ করা গরুগুলো রুগ্ন, দুর্বল ও রোগাক্রান্ত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুবিধাভোগীরা।
তাদের অভিযোগ, নিম্নমানের রুগ্ন এসব গরু নিতে অস্বীকৃতি জানালে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, "এই গরুই নিতে হবে, না নিলে অন্যদের দিয়ে দেওয়া হবে।"
এর পরে গত ২৬ মে চারজনকে ২ ঘন্টার মধ্যে গরু গ্রহণের আল্টি মেটাম দিয়ে নুটিশ জারি করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু হায়দার। এর পরে চারজন গরু না নিয়ে ২৬ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কোন প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে সেই রুগ্ন গরু গ্রহণ করেন তারা।
অভিযোগ কারীরা আরও বলেন, সরকারি টেন্ডার অনুযায়ী প্রতিটি গরুর বয়স হওয়ার কথা ছিল অন্তত দেড় বছর এবং ওজন ৮০ কেজি। কিন্তু বিতরণ করা গরুগুলোর অধিকাংশই বয়সে কম, ওজন ৫০-৬০ কেজির মধ্যে এবং অনেক গরু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তারা আশঙ্কা করছেন, এসব গরু পালন করে লাভের পরিবর্তে ক্ষতির মুখেই পড়তে হবে তাদের।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু হায়দার বলেন, গরুর ওজন ৮০ কেজির চেয়ে ২/১ কেজি কম হতে পারে। গরুগুলোর মান যথাযথ। বরং কিছু উপকারভোগী অহংকার করে গরু নিতে চাননি এবং আমাকে হুমকি দিয়েছেন।
গরু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘তুষার এন্টারপ্রাইজ’-এর স্বত্বাধিকারী রাসেল আহম্মেদ বলেন, গরুর মান ঠিক রয়েছে এবং গরুগুলো উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বুঝে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে সব গরু বিতরণও সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা বলেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানিয়েছেন গরুর মান ঠিক রয়েছে। তাই আমি বিতরণ করতে বলেছি। যেসব উপকারভোগী গরু নেননি, তাদের পরিবর্তে সিরিয়াল অনুযায়ী অন্যদের মাঝে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।