বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খাগড়াছড়িতে লাল সোনাইলের মেলা

স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি
  ০৩ জুন ২০২৫, ১৮:৫৮
খাগড়াছড়িতে লাল সোনাইলের মেলা
ছবি: যায়যায়দিন

পাহাড়ের পথে পথে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল, কনকচুড়াসহ বাহারি ফুলের মেলা। এরি মধ্যে সৌন্দর্যের ডানা মেলেছে আরেক অচেনা ফুল লাল সোনাইল।

অনেকের কাছে এটি ক্যাশিয়া জাভানিকা নামে পরিচিত। খাগড়াছড়ি শহরের প্রবেশমুখ জিরোমাইল পেরিয়ে সামনেই হটিকালচার পার্ক। পার্কের অপরদিকে অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার। বিহারের সীমানা ঘেঁষা ফুলের শাখা মেলেছে ‘লাল সোনাইল’। ফুলে ফুলে ভরে গেছে গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখা। চলার পথে সবার চোখ কেড়ে নেয় লাল সোনাইলের সৌন্দর্য। নামে লাল সোনাইল হলেও ফুলে গোলাপি রঙের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।

1

২০২০ সালে গাছটি রোপণ করেন খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের তৎকালীন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা। গত বছর থেকে ফুল আসা শুরু হলেও এবার একেবারে পুষ্পভারে মুখরিত। ছাতার মতো ডালপালা ছড়ানো গাছে এপ্রিল ও মে মাস পর্যন্ত থাকে ফুল। সড়কে চলাচলকারীদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে ক্যাশিয়া জাভানিকা। ফুলটি সুন্দর হলেও সর্বত্র দেখা যায় না। খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে ফুলে ফুলে শোভিত ক্যাশিয়া জাভানিকার বীথি থাকলেও পরবর্তীতে মড়কের আক্রমণে মারা যায়।

ক্যাশিয়া জাভানিকার বৈজ্ঞানিক নাম বুরামেসে পিঙ্ক কাসিয়া। গ্রীষ্মের ফুল। বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়াসহ উষ্ণমন্ডলীয় এলাকায় এ ফুল ফোটে। গাছ দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে।

প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বর্তমানে রাঙামাটি সড়ক বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। সড়কের পাশে সৌন্দর্য বাড়ানোর জাকারান্ডা, লাল সোনাইল, সোনালুসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গাছটি পাহাড়ে বহু বছর যাবত দেখা যায়। ১৯৯৪ সালে আমাদের বাড়ির পাশে একটি গাছ ছিল। সেটি প্রাকৃতিকভাবে জন্মেছিল। আমি খাগড়াছড়ি থেকে এ গাছের চারা সংগ্রহ করেছি। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রামের লাগায়ো অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহারের সীমানায় গাছটি লাগিয়েছিলাম। এখন সেটি ফুলে ভরে উঠেছে। ফুলের রং পিংক হওয়াতে দূর থেকে দর্শনার্থীদেরকে মুগ্ধ করে। এছাড়া দীঘিনালার বন বিহারসহ কয়েকটি এলাকায় এটি দেখা যায়। তবে সোনালু বা কৃষ্ণচূড়ার মতো এটির আধিক্য নেই।’

নিসর্গ বিষয়ক লেখক মোকারম হোসেন বলেন, ‘লাল সোনাইলের ফুল, পাতা ও গাছের গড়ন সুন্দর। গাছগুলো দেখতে ছাতার মতো। লাল সোনাইলের পোশাকি নাম পিংক ক্যাশিয়া বা পিংক শাওয়ার। নিসর্গবিদ অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা নাম রাখেন লাল সোনাইল। গ্রীষ্মের শুরুতে কচি পাতার সঙ্গে গোলাপি রঙের ফুলের থোকায় ভরে ওঠে গাছ। ফুল প্রায় ৩ সেন্টিমিটার চওড়া, সুগন্ধি, পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। ফল গোলাকার, লম্বা, গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। বংশবৃদ্ধি বীজের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে