স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য গাজীপুর সহ রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। সড়ক, মহাসড়কে বেড়েছে ঘরমুখো মানুষের ঢল।
বাড়তি যানবাহনের চাপ বাড়ায় মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে গাড়ি চলছে ধীর গতিতে। যানজট এড়াতে কাজ করছে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ জানায়, গাজীপুরের ঢাকা—ময়মনসিংহ ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রাজধানীসহ গাজীপুর ছাড়ছেন কর্মজীবী মানুষ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরা ও চান্দনা চৌরাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়তে থাকায় যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। এছাড়া গাড়ি পার্কিং ও যাত্রী উঠানো —নামানোর কারণে গাড়ির জটলা রয়েছে।
মহাসড়কের এসব পয়েন্ট ছাড়া বেশির ভাগ অংশে চিরচেনা যানজট না থাকায় স্বস্তি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা।
এছাড়া ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যানবাহনের চাপ বাড়ায় গাড়ির জটলা দেখা গেছে।
গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।
চাপ বাড়ায় স্টেশন এলাকাগুলোতে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার উভয়দিকে অন্তত ১২ কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ।
রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে রংপুরে যাবেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন।
সকাল ৯ টায় তার সঙ্গে কথা হয় চন্দ্রা এলাকায়। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে কোনাবাড়ী পর্যন্ত আসতে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি কিন্তু কোনাবাড়ি থেকে চন্দ্রা আস্তে সময় লেগেছে আড়াই ঘন্টা। এর মধ্যে কোথাও পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়নি।
স্থানীয় কারখানা শ্রমিক কবির হোসেন বলেন, গাজীপুরের সফিপুর থেকে চন্দ্রা যেতেই সময় লাগছে এক থেকে দুই ঘন্টা।
কোনো অবস্থাতেই যেন গাড়ি এগোচ্ছে না। যানবাহনের গাতিও অনেক কম। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরের অবশিষ্ট ৫০ ভাগ পোশাক কারখানায় ছুটি হওয়ার পর বিকেলে যানবাহনের চাপ বাড়বে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মহাসড়কে কাজ করছেন চার হাজার পুলিশ সদস্য। রয়েছেন সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও।
মঙ্গলবারের মতো আজও সকাল থেকে গাজীপুরের ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা দিয়ে ঈদে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।
ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গি এলাকা ও ভোগড়া বাইপাস থেকে সালনা তিন কিলোমিটার, ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও এর আশপাশের ১২ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় রাতভর থেমে থেমে যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সকালে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও স্টেশন এলাকাগুলোতে যানবাহনের ধীরগতি থাকায় ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এবার তিন পর্বে পোশাক কারখানায় ঈদের ছুটি হচ্ছে। গেল মঙ্গলবার ১০ ভাগ, গতকাল বুধবার ৪০ ভাগ এবং বৃহস্পতিবার ৫০ ভাগ কারখানায় ঈদের ছুটি হচ্ছে।
বেশিরভাগ কারখানাই নিজেদের পরিবহন ব্যবস্থা রেখেছে। যাদের গাড়ির ব্যবস্থা নেই তারা স্টেশনগুলোতে দীর্ঘসময় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে পর্যাপ্ত যানবাহন না পেয়ে খোলা ট্রাক, বাসের ছাদ, পিকাপ বা অন্য ছোট যানবাহনে করেই ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন। এই সুযোগ পরিবহন সংশ্লিষ্টরা অন্যবারের মতোই অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।
নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ওসি সওগাতুল আলম বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মহাসড়কে পুলিশ সদস্য ছাড়াও সেনা ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।