শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈদে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন ইকো পার্কে উপচে পড়া ভিড়

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  ১০ জুন ২০২৫, ১৯:২১
ঈদে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন ইকো পার্কে উপচে পড়া ভিড়
ছবি: যায়যায়দিন

ঈদের ছুটিতে যখন চারপাশে উৎসবের রঙ, তখন পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা জেলা প্রশাসন ইকো পার্ক হয়ে উঠেছে এক টুকরো চোখ জুড়ানো সবুজের স্বপ্ন।

বাঁশ-বেতের কারুকাজ, বাহারি ফুলের সারি, ফোয়ারার ঝলক আর দেশি-বিদেশি গাছগাছালির সমারোহে সেজে উঠেছে এই পার্ক। ঈদের দিন থেকে শুরু করে কয়েকদিন ধরে এখানে উপচে পড়া ভিড় জমেছে দর্শনার্থীদের।

1

জেলায় তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ২৫ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়। পরে পাঁচ একর জমি নিয়ে এই ইকো পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় জেলা প্রশাসন। প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা এই পার্কে রয়েছে ২০ হাজারের বেশি ফুল ও ফলের গাছ, কৃত্রিম লেক, পানির ফোয়ারা, হাঁটার পথ ও বসার জায়গা।

ইকোপার্ক সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ৩০ টাকার টিকিট কেটে প্রবেশ করেছেন পার্কে।

শিশুদের জন্য রয়েছে খেলাধুলার সুযোগ, আর প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে এটি হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক এক মুক্ত আঙিনা, আড্ডা, ছবি তোলা আর সময় কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে পার্কটি। পার্কের দর্শনার্থীদের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। রয়েছে নামাজ ও গাড়ির পাকিংয়ের ব্যবস্থা।

পরিবার নিয়ে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী হাসান তৌফিক জানান, পঞ্চগড়ে এমন সুন্দর একটি জায়গা গড়ে তোলায় আমরা সত্যিই খুশি। তবে যেহেতু নতুন তুলনামূলক ভাবে রাইড ও দেখার মতো স্থাপনা কম তাই পার্কে ঢোকার টিকিটের মূল্য কিছুটা কম হলে সাধারণ মানুষ আরও স্বাচ্ছন্দ্যে আসতে পারত।

জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ শুধু বিনোদন নয়, স্থানীয় অর্থনীতিতেও এনেছে গতি। পার্কের আশপাশে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান, খাবারের স্টল, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের ভিড়। অনেকেই বলছেন, এই পার্ক ঘিরেই তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা।

ইকো পার্কের ম্যানেজার নয়ন তানবিরুল বারি বলেন, দর্শনার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে আমরা পার্কে নতুন রাইড ও অবকাঠামো সংযোজনের পরিকল্পনায় রয়েছি। নিরাপত্তা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসন নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।

পার্ক নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, এই জমিটি একসময় পতিত অবস্থায় ছিল। এটি জেলার অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, পার্কটিকে দেশের অন্যতম মানসম্পন্ন ইকো পার্ক হিসেবে গড়ে তোলা। সেজন্য পর্যায়ক্রমে আরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও স্থাপনা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে শুধু ইকো পার্ক নয়, জমজমাট ছিল জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোও। দর্শনার্থীদের ভির দেখা গেছে তেঁতুলিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, মহানন্দা নদীর পাড়, সমতলের চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, অমরখানা মুক্তাঞ্চল পার্ক, হিমালায় বিনোদন পার্ক, দেবীগঞ্জ ডিসি পার্ক, ময়নার চর, মহারাজার দিঘী, মির্জাপুর শাহী মসজিদ ও পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন এলাকায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে