গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের ভাদার্ত্তী দক্ষিণপাড়া (পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি অফিস) এলাকায় অবস্থিত লিটন মিয়ার চা-পান দোকানের পাশেই বসেছে মৌসুমি ফলের রঙিন পসরা।
এই মৌসুমি ফল বিক্রির মাধ্যমে তিনি শুধুমাত্র জীবিকা অর্জন করেন না, বরং বাড়দত আয়েরও ব্যবস্থা করেন। প্রতি পিস ৬০, জোড়া ১০০ ও হালি ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রসালো আনারস।
লিটন মিয়া শুধু একা নন, এই মৌসুমি ফল বিক্রি করে স্থানীয় অনেকেই বাড়তি আয়ের আশায় এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত। চল্লিশোর্ধ লিটন মিয়া চা-পান দোকানী হলেও মৌসুমি ফল বিক্রি করে বেশ কিছুটা বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি জানান, “আমাদের দেশে এই সময় নানা রকম মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, তাল, জামরুল এসব ফল যখন পাওয়া যায়, তখন আমি সেগুলো বিক্রি করি। এটি আমার বাড়তি আয়ের একটি অন্যতম উৎস।”
লিটন মিয়া তার ব্যবসা নিয়ে বলেন, “এভাবে মৌসুমি ফল বিক্রি করে আমার পকেটে কিছুটা বাড়তি আয় হয়। কখনো কখনো ফলের ব্যবসা আমার চা-পান দোকানের থেকেও লাভজনক হয়ে যায়।”
এখন চলছে মধু মাস, যা বাংলাদেশের কৃষির জন্য ফলের একটি উর্বর সময়। লিটন মিয়ার মতে, “মধু মাসে ফলের বাজার উজ্জ্বল থাকে। এই সময় আনারস, কাঁঠাল, আম, জাম এসব ফল বাজারে পাওয়া যায় এবং আমি সেগুলো সস্তায় কিনে এনে বিক্রি করি। এতে আমারও লাভ হয়, এবং গ্রাহকদেরও ভালো মানের ফল পেতে সহায়তা হয়।”
কালীগঞ্জ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে এই ধরণের মৌসুমি ফল বিক্রি করা বেশ জনপ্রিয়। লিটন মিয়া নিজের প্রচেষ্টায় এই ব্যবসা করছেন, যাতে কৃষকরা ফল চাষ করে এবং বিক্রেতারা তা বাজারে নিয়ে এসে সবার কাছে পৌঁছানোর সুযোগ পান।
এছাড়া, লিটন মিয়া জানান, বিক্রি হওয়া ফলগুলো তিনি কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করেন। এতে কৃষকদের সুবিধা হয়, কারণ তারা নিজেরা সরাসরি বাজারে পৌঁছানোর ঝামেলা এড়াতে পারেন।
লিটন মিয়ার সাথে কথা বলার সময় দেখা যায়, একদল ক্রেতা লিটন মিয়ার কাছ থেকে আনারস ও কাঁঠাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে কথায় হয় ক্রেতা ওছমান মিয়ার সাথে।
তিনি বলেন, “ভালো ফলের দাম ভালোই থাকে, কিন্তু লিটন ভাইয়ের পসরা খুব সস্তা। আর ফলগুলোও একেবারে টাটকা ও মিষ্টি। সে কারণে আমি প্রায়ই এখান থেকে ফল কিনি।”
কথা হয় আরেক ক্রেতা রমজান আলীর সাথে। তিনি বলেন, “এখানকার ফলগুলো অনেক ভালো। আর দামও সস্তা। আমি প্রতি সপ্তাহেই এখান থেকে ফল কিনি।”
স্থানীয়রা বলেন, লিটন মিয়ার উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, পেশাগত দিক দিয়ে বিশেষ কিছু না হলেও, সচেতনভাবে অতিরিক্ত আয়ের পথ খুঁজে নিতে হলে উদ্ভাবনী মনোভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি যে মৌসুমি ফল বিক্রি করেন, তা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যই দেয় না, বরং গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতেও ভূমিকা রাখে।
তারা আরো বলেন, লিটন মিয়ার এই উদ্ভাবনী মনোভাব অন্যদের জন্যও একটি অনুপ্রেরণা, যেখানে অল্প কিছু পরিশ্রম ও বিচক্ষণতা দিয়ে জীবিকার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের পথ তৈরি করা সম্ভব।