চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে বালু ভরাটের কথা বলে নিজ বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে অপহরণ করা হয় জহির উদ্দিন মিন্টু (৪৯) নামে সাবেক এক যুবলীগ নেতাকে। তবে মাত্র সাড়ে ৮ ঘণ্টায় অপহৃত মিন্টুকে উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের স্লুইস গেইট এলাকা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এর আগে বুধবার (১১ জুন) রাত ৯টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বইক্যার পাড়া এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহরণের শিকার জহির উদ্দিন মিন্টু উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাজাহান সাহেবের বাড়ি এলাকার মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে। এ ছাড়াও তিনি একই ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি বলে জানিয়েছেন বর্তমান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন।
যুবলীগ নেতা জহিরের সঙ্গে তার ছোট ভাই মো. সোহেলকে (৩৫) অপহরণ করা হলেও পরে তাকে বাড়ি থেকে মুক্তিপণ নিয়ে আসার জন্য ছেড়ে দেন অপহরণকারীরা।
জহির উদ্দিন মিন্টুর ছোট ভাই মো. সোহেল বলেন, ‘আমার ভাই মিন্টু ডলু নদী থেকে বৈধ ইজারাকৃত জায়গা থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে ভিটা ও গর্তকৃত জায়গা ভরাট করে থাকেন।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার ভাইকে মোবাইলে ফোন করে এক ব্যক্তি বালু ভরাটের কথা বলে এওচিয়া ইউনিয়নের বইক্যার পাড়া এলাকায় আসতে বলে।
সে অনুযায়ী আমি ও আমার ভাই মোটর সাইকেল নিয়ে অপহরণকারীদের দেখানো জায়গায় গেলে তারা কিছু বুঝে উঠার আগে ভাই ও আমাকে ব্যাপক মারধর শুরু করে।তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে তারা আমাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দাবির টাকা দিতে আমার এক প্রতিবেশীর মোবাইল ফোনে কথা বলা শুরু করি।
এ টাকা না দিলে তারা আমাদের জানে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। একপর্যায়ে তারা আমাকে ছেড়ে দিয়ে ভাইকে পশ্চিম দিকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।
অপহরণকারী দলের সদস্য সংখ্যা ৭-৮ জন হবে। তারা সবাই অস্ত্রধারী। তবে তাদের আমরা চিনতে পারিনি। পরে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ঘটনাটি জানান।
বিষয়টি জানতে পেরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে কাঞ্চনা ইউনিয়নের স্লুইস গেইট এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে আমার ভাইকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।সাতকানিয়া সেনাবাহিনী ক্যাম্পে দায়িত্বরত ক্যাপ্টেন পারভেজ বলেন, অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মু্ক্তিপণ প্রদানের আগেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে জহির উদ্দিন মিন্টুকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. তফিকুল আলম বলেন, অপহরণের বিষয়ে পরিবারের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়ার পরপরই যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে সাড়ে ৮ ঘন্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।