আজ ১৩ জুন। নীলফামারীর সৈয়দপুরে ট্রেন ট্র্যাজেডি দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এইদিনে সৈয়দপুরে শহরে আটকেপড়া মাড়োয়াড়ি ও হিন্দু সস্প্রদায়ের পরিবারদেরকে ভারতে পৌঁছে দেয়ার নাম করে সৈয়দপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে একটি ট্রেনে জড়ো করা হয়। এই ট্রেনটিকে রেলওয়ে কারখানার উত্তরপার্শ্বের গোলাহাট এলাকার ফাঁকা জায়গায় থামিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর অ-বাঙালিরা নৃ-শংসভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের নাম দেয়া হয়েছিল অপারেশন খরচাখাতা। এই বর্বর হত্যাকাণ্ডে ৪৩৭ জন নারী-পুরুষ ও শিশু প্রান দেয়। সেদিন এদের মধ্যে ঘটনা টের পেয়ে ৬৫ জন ট্রেন থেকে পালিয়ে প্রানে রক্ষা পায়। এদের মধ্যে কয়েকজন এখনও বেঁচে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ট্রেন যাত্রার পুর্বে সৈয়দপুর রেল ষ্টেশনেই ৩৭ জন সুন্দর মাড়োয়ারী যুবতী মেয়েদেরকে বর্বর খান সেনারা সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়, যাদের খোঁজ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এ পরিস্থিতিতে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বার-বার মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল, মাড়োয়ারিদের ভয় নেই। তাদের নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৩ জুন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে হিন্দু মাড়োয়ারিদের তালিকা তৈরি করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী।
এসময় তারা জানান, ‘তাই প্রাণ বাঁচাতে আমরা হুড়মুড় করে ট্রেনটিতে উঠে পড়েছিলাম।
তারা জানান, ট্রেনে ৫০২ জনের মত নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধকে নিয়ে সকাল ১০টায় শিলিগুড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। কিন্তু কিছুদূর গিয়ে গোলাহাট নামক স্থানে থামিয়ে ট্রেনটিতে উঠে পড়ে অ-বাঙালিরা। তাদের হাতে ছিল তলোয়ার, রামদা। আমরা টেনের বগির জানালা ফাঁক করে দেখতে পাই, বাইরে পাকিস্তানি বাহিনী ঘিরে রেখেছে ট্রেনটি। এ ট্রেন ট্রাজেটির ঘটনায় ৪৩৭ জনকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১’সালের ১৩ জুনের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডে শহীদদের আত্মদানে তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন সৈয়দপুরবাসী।