ঢাকার কেরানীগঞ্জে কৃষিজমিতে জোরপূর্বক ১৬ বছর ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জমির মালিক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার জাজিরা সেভেন স্টার ডকইয়ার্ড এলাকায় শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে ভুক্তভোগীরা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন ও সহকারী কমিশনার জান্নাতুল মাওয়াকে ঘিরে বিক্ষোভ মিছিলে বলেন, সাবেক বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জোরপূর্বক আমাদের জমি দখল করে গৃহস্থালি ময়লা-আবর্জনা ফেলতেন। আমরা জাজিরাবাসী কিছু বললে হতো বিএনপি-জামায়েত বলে হামলা-মামলা। এসময় বিক্ষোভ মিছিলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু, বিএনপি নেতা ওমর শাহনেওয়াজ, কোন্ডা ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি নুর হোসেন ও অ্যাডভোকেট শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ করে আব্দুল লতিফ ও ইমরান হোসেন জানান, স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন ১৬ বছর ধরে কেরানীগঞ্জ জাজিরা মৌজার আরএস ১১৭৭ দাগের ৯৭ শতাংশ জমি আওয়ামী লীগের ক্ষমতা জোর ব্যবহার করে দখল করে রেখেছিলেন। এ জমির মালিক ফুলচাঁন, আব্দুল মজিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ। তাদের উভয় পিতা কালাচাঁন।
তারা বলেন, আমাদের জমিতে জোরপূর্বক ময়লা ফেলা হচ্ছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি— ময়লা সরিয়ে আমাদের জমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে জাজিরার বাতাসকে বিষমুক্ত করুন। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে আমরা কোনো চাষাবাদ করতে পারছি না ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে। ঘরে থাকা কষ্টকর ফসলমাঠ সৃষ্টি হয়েছে এ ময়লার ভাগাড়ে। ফসল ফলাতে না পারায় আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
দিদার হোসেন বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এখানে থাকাই দায়। নাক মুখ চেপে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধ হওয়ায় অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার। গৃহিণী শাহনাজ পারভীন বলেন, আশপাশের বাড়ির ও বাজারের একাংশের ময়লা এখানে নিয়মিত ফেলা হচ্ছে। আমরা বহুবার বাধা দিয়েছি। আমাদের বাধার কারণে এখন আর দিনের বেলা ময়লা না ফেলে রাতের বেলা ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লা বৃষ্টি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। ময়লা থেকে বংশবিস্তার করছে মশা মাছি। ময়লা-পানির কারণে মশা-মাছির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া, ডেগু জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ।
এবিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জাজিরা মৌজার ব্যক্তি মালিকানা জমির পাশাপাশি সরকারি খাস খতিয়াতভুক্ত আরএস ১১৭৭ দাগে ৪ একর ৪৩ শতাংশ জমির মধ্যে ১১৩ শতাংশ খাস খতিয়ানভুক্ত জমিও রয়েছে। আমরা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া হবে।