পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার ইন্দুরহাট-মিয়ারহাট সংযোগ সেতুর দুরবস্থা এখন এলাকাবাসীর জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নেছারাবাদের গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয়েছিল শুধুমাত্র পথচারীদের চলাচলের জন্য। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে জনসংখ্যা ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেতুটির ওপর চাপ বেড়েছে বহুগুণে।
মাত্র ১০ ফুট চওড়া এই ফুটব্রিজটি এখন প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত প্রায় ২ হাজার রিকশা এবং পণ্যবাহী প্রায় ১০০টি পিকআপ ও ট্রাক চলাচল করে এই সেতু দিয়ে।
ফলে সেতুটিতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে, যা সাধারণ মানুষের ভোগান্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এলাকার বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন, পথচারীদের জন্য নির্মিত এই সেতুতে ভারী যানবাহনের নিয়মিত চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কাঠামোগত দিক থেকে এটি ভারী লোড বহনের জন্য উপযুক্ত নয়। ইতোমধ্যে সেতুটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও ক্ষয়ের চিহ্ন দেখা গেছে, যা অদূর ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইন্দুরহাট ও মিয়ারহাট এলাকার মধ্যে এই সেতুই একমাত্র সহজ যোগাযোগ মাধ্যম।
বিশেষ করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পথ। কিন্তু এই সেতুতে এত ভারী যানবাহনের চাপ বাড়ায় ব্যবসায়িক কাজেও বিঘ্ন ঘটছে।
ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রায়ই সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না, যা স্থানীয় অর্থনীতিতেও খারাপ প্রভাব ফেলছে।
এ ব্রীজের উভয় দিকে রয়েছে স্কুল ও কলেজ। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীদেরও প্রতিদিন চলাচলেও চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য এলাকাবাসী দ্রুত একটি বিকল্প যানবাহন চলাচলের উপযোগী নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, জনস্বার্থ ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্থানীয় প্রশাসনের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, যার দায়ভার প্রশাসন এড়াতে পারবে না।
সব মিলিয়ে, পিরোজপুরের এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় একটি টেকসই এবং আধুনিক সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। জনগণের নিরাপদ চলাচল এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছে স্থানীয় জনগণ।