রোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সৈয়দপুর-তারাগঞ্জ সড়ক

সাড়ে ৩ বছরেও শেষ হয়নি ১৭ কি.মি. সংস্কার কাজ

টাকা নিয়ে ঠিকাদার উধাও
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ১৪ জুন ২০২৫, ১৭:১৫
সাড়ে ৩ বছরেও শেষ হয়নি ১৭ কি.মি. সংস্কার কাজ
ছবি: যায়যায়দিন

নীলফামারীর সৈয়দপুরে উপজেলা প্রকৌশল অধীনে সৈয়দপুর থেকে রংপুরের তারাগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক সংস্কার ও পাকাকরণের কাজ এক বছরে শেষ হওয়ার কথা। সাড়ে ৩ বছর পেড়িয়ে গেলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি।

অথচ, প্রকল্পের ১৭ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১০ কিলোমিটার যা কাজের ৬৫ শতাংশ কাজ করে কাজে বরাদ্দের প্রায় ৬২ শতাংশ ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

1

চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ওই ঠিকাদারের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা করে দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়।

২০২৪ সালের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এর মধ্যে হঠাৎ করেই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। যোগাযোগের চেষ্টা করেও খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের।

সৈয়দপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ওই জিসি সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২২ জানুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়।

দরপত্র অনুযায়ী সৈয়দপুরের পোড়াহাট থেকে রংপুরের তারাগঞ্জ পর্যন্ত সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২১ কোটি ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পান নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স। কাজ শুরু হয় একই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি।

চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে গত বছরের এপ্রিলে শেষ করার কথা থাকলেও বর্তমানে ১৭ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ কিলোমিটার সড়কের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখনও ৩৫ শতাংশ কাজ বাকি।

তবে এরই মধ্যে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার।

সরেজমিনে সংবাদকর্মীরা গেলে দেখা যয়, সড়কটির ১০ কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো ৭ কিলোমিটারের কাজ পড়ে রয়েছে। অনেক স্থানে শুধু ইট বিছিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কোথাও খোঁয়া বিছানো হলেও কার্পেটিং করা হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ফেলে রাখার ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থান ধসে যাওয়াসহ ভেঙে গেছে। অনেক জায়গায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টি হলে সড়কটিতে এখন পানি জমে এবং শুকনো মৌসুমে উড়ে ধুলা। অনেক জায়গায় বালু ও খোঁয়া ফেলে ভরাট করা হলেও রোলার করা হয়নি। ফলে খোঁয়ার উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় সড়কের পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও খারাপ হয়ে গেছে।

সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এমএম আলী রেজা রাজু সংবাদকর্মীদের জানান, এ পর্যন্ত সড়কের ৬৫ শতাংশ কাজ হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ওই ঠিকাদারকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু এরমধ্যে হঠাৎ করেই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। যোগাযোগের চেষ্টা করেও খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের।

এমনকি মোবাইল ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। চুক্তি বাতিল করে আবার দরপত্র দিয়ে কাজটি শেষ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে