নোটিশ ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে গাজীপুরের শ্রীপুরে ২টি কারখানায় বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছে। এসময় একটি কারখানার শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে এবং অন্যটি কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধরের অভিযোগ পাওয়া যায়।
আহত হয়েছেন অন্তত ১০০। খবর পেয়ে পুলিশ আসলে সেখানে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে গেট ভেঙে আহতদের উদ্ধার করা হয়। এসময় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন ৪৩জন।
শনিবার (১৩ জুন) সকালের দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের বিবিএস কেবল ও উপজেলার বেড়াইদেরচালা গ্রামে অবস্থিত ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামের কারখানায় ওইসব ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন, শ্রমিক ও কারখানা সুত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকজন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে সকালের দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের বিবিএস কেবল নামের একটি কারখানার কয়েক শ শ্রমিক এই বিক্ষোভ করেন। এসময় আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের নামক কারখানায় বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা।
এসময় কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। একপর্যায়ে কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে কর্মকর্তাদের মারধর করলে সেখানে কমপক্ষে ১০০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবী জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে মূল ফটক ভেঙে কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে ঘটনায় জড়িত ৪৩ জনকে আটক করা হয়।
ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা জানান, ঈদের আগে কারখানার এক কর্মকর্তাকে অপসারণের জন্য শ্রমিকদের পক্ষে দাবি জানানো হয়। সে সময় আন্দোলনের মুখে মনির নামে এক কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়। তখন শ্রমিকেরা দাবি করেন, যেন কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা না হয়। কিন্তু ঈদের ছুটি শেষ হলে আজ (শনিবার) কর্মস্থলে এসে অনেক শ্রমিক জানতে পারেন, তাঁদের চাকরি নেই। এই ক্ষোভ তারা কারখানার মূল ফটক তালাবদ্ধ করে। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য আসেন।
এ বিষয়ে কারখানাটির মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসাইন বলেন,' যথাযথ নিয়ম মেনেই শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। কিন্তু আজকে সকালে কিছু না বলেই কয়েকজন শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে কারখানা ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের মারধর করে মূল ফটক তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে উদ্ধার করেন।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘ দুটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কৌশলগত পদক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনা হয়। এ ঘটনায় কারখানার প্রশাসনিক ও এডমিন বিভাগ মিলিয়ে শতাধিক আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ চলমান।