ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া তারাকান্দা উপজেলায় বিকেলে সিএনজি অটোরিকশার সঙ্গে এম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংর্ঘষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। এ নিয়ে জেলায় পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা বাঁশবাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রে বাসের ধাক্কায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৮ জন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত আরও দুইজন মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহতরা হলেন- লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার নিজগুড্ডিমারী গ্রামের মালেক শাহের ছেলে কাজিম উদ্দিন (২৮), ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামকুড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল মিয়া (৩০), ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৮), হালুয়াঘাট উপজেলার বালিজুড়ি গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস আলীর স্ত্রী হাছিনা খাতুন (৫০), ফুলপুর উপজেলার নিশুনিয়াকান্দা গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে জহের আলী (৭০) ও অপরজন হালুয়াঘাট উপজেলার কয়রাহাটি গ্রামের মৃত হাজী জবান আলীর ছেলে শামসুদ্দিন (৬৫)। ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যুর পর মমেক হাসপাতালে আরও দুইজন মারা যান। তবে তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, হালুয়াঘাট থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে কাজিয়াকান্দা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রর সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় ঘন্টাখানেক যান চলাচল বন্ধ ছিল।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিক উদ্দিন জানান, ফুলপুরে বাস ও মাহেন্দ্র দুর্ঘটনায় মমেক হাসপাতালে আহত সাতজন ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে হাসপাতালে আসার পরে অজ্ঞাত দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা যান।
ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হাদি জানান, ছয়জনের মৃতদেহ শনাক্ত করে থানায় রাখা হয়েছে। বাকি দুইজনের মৃতদেহ মমেক হাসপাতালে রয়েছে। তবে তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, ওভারটেক ও ওভার স্পিডই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ। সব বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রাস্তায় গাড়ি চলাচলে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং নিয়মকানুন ও আইন মানতে হবে। এসব না মানার কারণে রাস্তায় দিনদিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।