শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

হাটহাজারীতে ছাগল বিতরণে হট্টগোল

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২১ জুন ২০২৫, ১৮:৩৪
হাটহাজারীতে ছাগল বিতরণে হট্টগোল
ছবি: যায়যায়দিন

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের ছাগল বিতরণ করা হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (২য় পর্যায়ে) মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের আওতায় হালদা নদী সংশ্লিষ্ট সুফলভোগীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ছাগল বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান। অফিস সহকারী মো. লোকমান হোসেনের সঞ্চালনায় ৩২০ জন সুফলভোগীকে এসব বিতরণ করা হয়েছে।

তবে ৭১ জনকে দুটি ছাগলের পাশাপাশি একটি ছাগলের রাখার ঘর, ভিটামিন ক্যালসিয়াম, ক্রিমিনাশক ট্যাবলেট, ১৫ কেজি করে ভূষি বিতরণ করার কথা থাকলেও ছাগল দেখেই হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এর আগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হাটহাজারী উপজেলার ডা. প্রবীর দেবের মাধ্যমে পিপিআর ভ্যাকসিন প্রদান করা হয় প্রতিটি ছাগলকে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শান্তিপুর্ণভাবে ছাগল বিতরণ চললেও আনুষ্ঠানিকতার পর পরই অর্ধ শতাধিক সুফলভোগী ছাগল দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।

তাদের দাবি ছাগল রোগাক্রান্ত। কয়েকদিন পরই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বরাদ্দকৃত ছাগলের আকার ওজন অনুযায়ী এ ছাগল ছোট এবং উন্নত জাতের নয়।

জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকার যে বাজেট তা দিয়ে উন্নত জাতের ছাগল দেওয়া যেত। বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য প্রদানকৃত ছাগলে তারা অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেন।

এ বাজেটে অন্যান্য উপকরণ বাদ দিয়ে একটি উন্নত জাতের গরুর বাছুর দিলে তারা উপকৃত হত।

গড়দুয়ারা ইউনিয়নের মো. সিরাজ, উত্তর বুড়িশ্চর এলাকার রবিন্দ্র দাস, গুমানমর্দ্দন এলাকার মো. হাশেম, মধ্যম মাদার্শার মনিন্দ্র দাস, মদুনাঘাট এলাকার তপন দাস, উত্তর মাদার্শার মো. হাবিবুল্লাহসহ প্রায় ৩০ জন সুফলভোগী আক্ষেপ করে বলেন, ১৫ বছর আগে শত শত জেলের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার নামে আইডি কার্ড করা হলেও আজ অব্দি কখনও কিছুই দেয়নি।

অথচ বহুবার দেওয়ার কথা বলে আইডি কার্ডের কপি নিয়েছিল বিভিন্ন দপ্তর। এত বছর পর নিতে এসে দেখি ছোট ছোট অনুন্নত জাতের ছাগল। যা হালদা পাড় এলাকার জন্য অনুপযোগী। আমাদের অন্তত একটি গরুর বাছুর দিলে খুশি হতাম।

তবে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ছাগলের জাত, আকার, ওজনের বিষয় ঠিকাদার জানেন। ঢাকার ইজিপির মাধ্যমে ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে। কি দেবেন না দেবেন সেটা জেলা বিগত পাঁচ বছর আগে চূড়ান্ত করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটা শুনেছি। সত্য হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবগত করা হবে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিসের কাজে চট্টগ্রামের বাহিরে ছিলেন জানিয়ে বলেন, ছাগলের বিষয়টা প্রকল্পের পরিচালক ভালো জানবেন। তারপরও খবর নিয়ে বিষয়টা দেখছি।

জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, নির্দেশনা যেভাবে আছে সেভাবেই দেওয়া হচ্ছে। হয়তো দুই-একটির সাইজ সামান্য এদিক-ওদিক হতে পারে। সুস্থতা নিশ্চিত করতে উপস্থিত একজন ভিএস'র প্রত্যয়ন নেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে সুফলভোগীদের সাথে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। সশরীরে এসে বিষয়টা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে