জুলাই অভ্যুত্থনে সক্রিয় থাকা সাতটি সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, তাদের আন্দোলনের কিছু সহযোদ্ধাকে ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
সোমবার (৩০ জুন) খুলনা প্রেসক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন তারা। একই সঙ্গে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আন্দোলন ও জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি থেকে নিজেদের সংগঠনগুলোকে সরিয়ে রাখার ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জুলাই আন্দোলনের সময় চোখ হারানো আবদুল্লাহ আল শাফিল। তিনি বলেন, “আমরা এসআই সুকান্তর নির্মম আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম এবং তার গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আমাদের দাবির প্রাথমিক সাফল্য এসেছে। এরপরও আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখার বা ভিন্ন বিষয়ে এগিয়ে নেওয়ার কোনো দায় আমাদের নয়। যারা আমাদের নাম ব্যবহার করে অন্য উদ্দেশ্যে আন্দোলন চালাচ্ছেন, তাদের দায়ভার জুলাই আন্দোলনের প্রকৃত কর্মীরা নেবে না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, “জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে মেলার অনুমতির দাবি তোলার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। জুলাই উদযাপন মানেই মেলা—এমন ধারণা ভুল। কেউ যদি July নাম ব্যবহার করে বিতর্কিত কাজ করেন, তাহলে আমরা প্রতিবাদ করবো।”
তিনি আরও বলেন, “আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত অন্যায়-অবিচারের বিচার চাওয়া হবে। কোনোভাবেই মব তৈরি বা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সংস্কৃতিকে আমরা সমর্থন করি না।”
সংবাদ সম্মেলনে জুলাই উপলক্ষে মাসব্যাপী ৩৬ দিনের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শহীদদের স্মরণে দোয়া
রক্তদান ও বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ক্যাম্প
রাজনৈতিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন
স্কুল-কলেজে রচনা, কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জুলাই বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন
পথনাট্য, মঞ্চ নাটক, গান ও কবিতা পরিবেশনা
‘জুলাই স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
টেরাকোটার মাধ্যমে স্মৃতি সংরক্ষণ
বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ‘এক ক্লিকে প্রতিবাদ’ ফটো ক্যাম্পেইন
‘আদর্শ জেলা খুলনা’ প্রচারণা, সচিত্র প্রদর্শনী
আহত ও নিপীড়িতদের কণ্ঠে গণশুনানি
জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান
‘বিচার চাই, রাজনীতিকরণ নয়’ কর্মসূচি ও মাসব্যাপী পোস্টারিং, দেয়ালিকা প্রদর্শনী
অংশগ্রহণকারী সংগঠন ও নেতারা
সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাস্টিস ফর জুলাই, জুলাই রেভ্যুলুশনারি অ্যালায়েন্স, আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (PUCAB) ও রংমশাল।
উপস্থিত নেতাদের মধ্যে ছিলেন—মিরাজুল ইসলাম ইমন, সাইফ নেওয়াজ, জাহিদুল ইসলাম জিহাদ, ফয়জুল্লাহ ইকবাল শাকীল, গালিব মাহামুদ জাহিদী, আব্দুল মুহায়মিন আদীব, মুনতাসির, শেখ সহিদুল ইসলাম জিহাদ, নাঈম ইসলাম, অলিভী আহম্মেদ নাবিল, মুহিব্বুল্লাহ মুহিব, তামীম হাসান লিওন, রাকিবুল ইসলাম বনি ও শাহরিয়ার সাদ প্রমুখ।