সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নে গবাদি পশুর মধ্যে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে প্রতিদিনই প্রায় সুস্থ সবল গরু আক্রান্ত হচ্ছে এবং চিকিৎসার অভাবে অনেক গরু মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যমুনার চরে অবিস্থত তেকানী, চরগিরিশ, নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ি, নিশ্চিন্তপুর ও মনসুরনগর ইউনিয়নে গরুর এই ভাইরাস জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের পানাগাড়ি গ্রামের কৃষক মাজম ফকিরের একটি গাভী, আকালিয়ার একটি ষাড়, আনোয়ার মিয়া ও আকতার মন্ডলের একটি করে বলদ এই রোগে এরই মধ্যে মারা গেছে। আর আক্রান্ত হয়েছে তেকানি ইউনিয়নের পলাশ শেখের একটি, আব্দুস সালাম ও নায়েব আলীর মোট পাঁচটি গরু।
কৃষক আকালিয়া বলেন, ‘আমরা চরের মানুষ। এহানে কোন সরকারি ডাক্তার আমরা পাইনা। গরুটা মরে যাওয়ায় আমি ক্ষতির মুখে পড়েছি।’
তেকানি গ্রামের পলাশ শেখ জানান, ‘আমরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করেও তেমন কোন সহায়তা পাইনি। এখন নিজেদের চেষ্টায় ওষুধ কিনে চিকিৎসা করছি। দেখা যাক কি হয়।’
নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের জজিরা মধ্যবাজার এলাকার সোহেল কারী জানান, ‘আমার একটি গরু তিনদিন যাবৎ খাচ্ছে না। গা ফুুলে ফোস্কার মতো উঠেছে। কি করবো বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দিদারুল আহসান বলেন, ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ এক ধরনের মথা মাছিবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। এর কোন প্রতিষেধক সরকারিভাবে সাপ্লাই নেই।
একটি ভ্যাকসিন বাজারে পাওয়া যায় সেটা কিনে কৃষককে গরুর চিকিৎসা করতে হবে। মশামাছি যেন গরুকে কামড়াতে না পারে সেজন্যে মশারী ব্যবহার করা যেতে পারে।
গরুর চিকিৎসা বিষয়ে তিনি জানান, চরাঞ্চলের দুর্গম এলাকায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছানো কিছুটা কঠিন । তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে জরুরি সেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে স্থানীয় খামারি ও কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। একমাত্র আয়ের উৎস গরু মারা যাওয়ায় অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।