যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন ২নং স্থল ইউনিয়ন। ছোট চৌহালী থেকে চালুহারা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ নদীতীরবর্তী অঞ্চল জুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে নদীর স্রোত। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫টি গ্রাম হারিয়েছে তার বসতি, জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও বহু প্রজন্মের স্মৃতি।
এই দীর্ঘদিনের অবহেলা আর অনিরাপত্তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জনতার অন্তরের আর্তনাদ রূপ নেয় এক মানববন্ধনে। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১১টায় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক শতাধিক সাধারণ মানুষ, কৃষক, শিক্ষার্থী, নারী-পুরুষসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে আয়োজন করেন এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন।
তাদের মুখে ছিল দাবি,
“আমাদের দাবি মানতে হবে, যমুনার তীর বাঁধতে হবে।”মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ২নং স্থল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বেপারী, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আলী মেম্বার, তাঁতী দলের ইউনিয়ন সভাপতি সন্তেষ আলী ব্যাপারী, ছাত্রনেতা রাজ আহমেদ, ইউপি সদস্য সালমা জাহান শিল্পী, রাকিবুল ইসলাম বাচ্চু, নুর আলম, বেলাল খান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “এ নদী কেবল জমি নয়, আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য গ্রাস করছে। যমুনার ভাঙনে আমরা শুধু ঘর হারাচ্ছি না, হারাচ্ছি শেকড়, পরিচয়, ভবিষ্যৎ।”
তারা আরও বলেন, শত শত পরিবার ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শিশুদের পড়াশোনা বন্ধ, কৃষকদের জমি নদীতে, বৃদ্ধদের শেষ ঠিকানাটুকু পর্যন্ত নেই। অথচ বছরের পর বছর ধরে সরকারি কোনো টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অবিলম্বে যমুনা নদীর তীরে টেকসই তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ, নদীশাসন ও জরুরি প্রকল্প বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান। বক্তাদের মতে, আর একটুও দেরি হলে স্থল ইউনিয়নের বহু গ্রাম চিরতরে মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।
এই মানববন্ধন ছিল কেবল একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি নয়, এ ছিল অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নিঃস্ব মানুষের হৃদয়ঘন কণ্ঠে শেষ আকুতি।