সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে চট্টগ্রামে তাজিয়া মিছিল

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  ০৬ জুলাই ২০২৫, ২১:০৯
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে চট্টগ্রামে তাজিয়া মিছিল
রোববার (৬ জুলাই) নগরের সদরঘাট ইমামিয়া ইশনা আশারা ইমামবারগাহ থেকে শুরু হয় এই শোকমিছিল।

কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণে চট্টগ্রাম নগরে শিয়া সম্প্রদায় বের করেছে শোকমিছিল।

রোববার (৬ জুলাই) নগরের সদরঘাট ইমামিয়া ইশনা আশারা ইমামবারগাহ থেকে শুরু হয় এই শোকমিছিল। চারপাশ ‘হায় হোসাইন, হায় হোসাইন’ ধ্বনিতে ভারী হয়ে ওঠে; করুণ সুরে মার্সিয়া আর বুক চাপড়ানো মাতমে কেঁপে উঠে পুরো এলাকা।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন মাওলানা মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন। মার্সিয়া জুলুস কালীবাড়ি রোড হয়ে নিউমার্কেট পৌঁছালে সেখানে পথচারীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন মাওলানা আমজাদ হোসাইন।

তিনি বলেন, ইসলামকে রক্ষা করতে গিয়ে নবীর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) পরিবার-পরিজন ও সঙ্গী-সাথী নিয়ে ৬১ হিজরীতে কারবালার প্রান্তে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করে যে মহান আত্মত্যাগের নিদর্শন রেখে গেছেন সেই আত্মত্যাগ থেকে আমাদেরকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে নিজেদের মধ্যে কালি মাখামাখি, হানাহানি।

পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বে পবিত্র ধর্ম ইসলামকে কলঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে যেসকল জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠি ইসলামের নামে মানুষ হত্যাসহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং সকল মানুষের কাছে সত্য দ্বীনকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে।

তাহলেই ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মহান ত্যাগ সার্থকতা লাভ করবে।

তিনি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানান।

তাজিয়া মিছিলে অংশ নেন শিয়া সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ, কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে শিশু-বৃদ্ধরা। সবার পরনে ছিল শোকের প্রতীক কালো পোশাক। কেউ কেউ হাতে কালো পতাকা, পাঞ্জা ও ব্যানার নিয়ে ছিলেন।

মিছিলে আসা এহসান উদ্দিন বলেন, আমি গত ২০ বছর ধরে এই শোক মিছিলে অংশ নিচ্ছি।

আমার সন্তানদেরও শেখাচ্ছি, কারবালার ঘটনা কেবল ধর্মীয় নয়, মানবতার শিক্ষা দেয়। হোসাইনের আত্মত্যাগ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় অন্যায়ের সঙ্গে আপস চলে না।

মিছিল ঘিরে নগরে ছিল নিরাপত্তা বলয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক টিম দায়িত্ব পালন করে। মিছিলে স্বেচ্ছাসেবকরাও নিরবচ্ছিন্নভাবে সহযোগিতা করেন।

ইমামবাড়ায় ফিরে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে মিছিল শেষ হয়। কারবালার শহীদদের জন্য দোয়া চাওয়া হয় এবং জুলুমের বিরুদ্ধে অবস্থানের শপথ পুনর্ব্যক্ত করেন অংশগ্রহণকারীরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে